আয়নিক বন্ধন কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো আয়নিক বন্ধন কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
আয়নিক বন্ধন কাকে বলে?
ইলেকট্রন আদানপ-প্রদানের মাধ্যমে গঠিত ক্যাটায়ন এবং অ্যানায়নসমূহ যে আকর্ষণ বল দ্বারা যৌগের অণুতে আবদ্ধ থাকে তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।
যেমন – NaCl এর মধ্যে Na ও Cl এর মধ্যকার বন্ধন আয়নিক বন্ধন। সুতরাং NaCl একটি আয়নিক যৌগ।
Ionic Bond Kake Bole?
ধাতব ও অধাতব মৌলের রাসায়নিক বিক্রিয়াকালে ধাতুর পরমানুর বহিঃস্তর হতে অধাতু পরমানুর বহিঃস্তরে এক বা একাধিক ইলেকট্রন স্থানান্তরিত হওয়ার মাধ্যমে সৃষ্ট ধনাত্বক আয়ন ও ঋণাত্বক আয়নের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা যে বন্ধন গঠিত হয় তাকে আয়নিক বন্ধন বা তড়িৎ যোজী বন্ধন বলে।
মনে রাখার কৌশল: উপরের যেকোনো একটি সংজ্ঞা ১০ বার পড়ুন। তাহলে দেখবেন এমনিতে মনে থাকছে। ❤️
Also Read: আয়তন কাকে বলে?
আয়নিক যৌগের সাধারণ ধর্মাবলি
আয়নিক যৌগের কতগুলো সাধারণ ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলো হল-
- সকল আয়নিক যৌগ কঠিন অবস্থায় কেলাস বা স্ফটিকাকারে থাকে।
- বিভিন্ন আয়নিক যৌগের ইলেকট্রনিক গঠন অভিন্ন হলে কঠিন অবস্থায় এদের স্ফটিক গঠন একই রূপ হয়।
- আয়নিক যৌগ সমূহের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক খুব বেশি হয়। এরা অনুদ্বায়ী হয়।
- আয়নিক যৌগ সমূহ সাধারণত পানিতে দ্রবনীয় হয়।
- কঠিন অবস্থায় এরা বিদ্যুৎ পরিবাহী নয় কিন্তু বিগলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় এরা বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
- আয়নিক কেলাস বা স্ফটিক সমূহ ভঙ্গুর হয়।
- আয়নিক যৌগ সমুহ অত্যন্ত দ্রুত বিক্রিয়া করে।
আয়নিক বন্ধন গঠনের শর্ত কি কি?
- প্রথম মৌলের অর্থাৎ ধাতুর নিস্ন আয়নীকরন শক্তি।
- দ্বিতীয় মৌলের অর্থাৎ অধাতুর উচ্চ ইলেকট্রন আসক্তি।
- গঠিত আয়নিক যৌগের উচ্চ ল্যাটিস শক্তি।
আয়নিক বন্ধনের বৈশিষ্ট্য কি কি?
- ধাতু ও অধাতু আয়নিক যৌগ গঠন করে।
- গলিত বা দ্রবীভূত অবস্থায় আয়নিক যৌগ বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
- এরা অপোলার দ্রাবকে অদ্রবণীয়।
- আয়নিক যৌগের রাসায়নিক বিক্রিয়ার গতি দ্রুত হয়।
- আয়নিক যৌগের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক উচ্চ হয়।
- আয়নিক যৌগ সমূহ পোলার হওয়ায় পানিতে দ্রবণীয়।
আয়নিক বন্ধনের সীমাবদ্ধতা কি কি?
- অধাতব পরমাণুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয় না। দুটি বিপরীতধর্মী মৌল যেমন- ধাতু ও অধাতুর মধ্যে আযনিক বন্ধন গঠিত হয়।
- কোন রাসায়নিক বন্ধনই ১০০% আয়নিক হয় না। প্রায় ক্ষেত্রেই আংশিক আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
- অনেক ক্যাটায়নে অষ্টক নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা যায়। এদের সর্ববহিস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনিক গঠন S2 p6 d10, S2 p6 নয়।ধরি, cu+, zn+ এদের ক্ষেত্রে সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনিক গঠন 3s2 3p6 3d10
- ধাতু ও অধাতুর মধ্যে বন্ধনে আয়নিক বন্ধনের বিশেষ অবদান থাকলেও তাদেরকে আসলে আয়নিক যৌগ বলা যায় না যেমন Alcl3 যৌগে আয়নিক বৈশিষ্ট্য কম রয়েছে অর্থাৎ আয়নিক ধর্ম কম রয়েছে।
- সব ধাতুর সাথে সব অধাতুর আয়নিক বন্ধন সৃষ্টি না হতে পারে।
- আয়নিক বন্ধনে একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে যা গ্রহণের জন্য অধিক শক্তির প্রয়োজন হয়। এজন্য আয়নিক বন্ধনে উচ্চ আধানযুক্ত আয়ন খুব কমই গঠিত হয়। যেমন- ফ্লোরিন পরমাণু F আয়ন গঠন করে কিন্তু F- গঠন করে না।
SOME FAQ:
আয়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন দাতা হিসেবে কাজ করে কোন পরমাণু?
আয়নিক বন্ধনে ইলেকট্রন দাতা হিসেবে কাজ করে ধাতব পরমাণু।
সোডিয়াম ক্লোরাইডে কোন ধরনের বন্ধন বিদ্যমান?
সোডিয়াম ক্লোরাইড-এ আয়নিক বন্ধন বিদ্যমান।
ধাতু ও অধাতুর মধ্যে কোন বন্ধন গঠিত হয়?
ধাতু ও অধাতুর মধ্যে আয়নিক বন্ধন গঠিত হয়।
তো আজকে আমরা দেখলাম যে আয়নিক বন্ধন কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!