উপসর্গ কাকে বলে? | উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?

উপসর্গ কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো উপসর্গ কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

উপসর্গ কাকে বলে,উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি,বাংলা উপসর্গ,সংস্কৃত উপসর্গ,বিদেশি উপসর্গ

উপসর্গ কাকে বলে,উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি,বাংলা উপসর্গ,সংস্কৃত উপসর্গ,বিদেশি উপসর্গ
উপসর্গ কাকে বলে

উপসর্গ কাকে বলে?

যেসব বর্ণ বা বর্ণের সমষ্টি ধাতু এবং শব্দের পূর্বে বসে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ কিংবা সংকোচন ঘটায়, তাদেরকে বলা হয় উপসর্গ।

যেমন—প্র, পরা, পরি, নির ইত্যাদি।

উপসর্গ’ কথাটির মূল অর্থ ‘উপসৃষ্ট’। এর কাজ হলো নতুন শব্দ গঠন করা। উপসর্গের নিজস্ব কোন অর্থ নেই, তবে এগুলো অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে থাকে। মনে রাখতে হবে, উপসর্গ সব সময় মূল শব্দ বা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়।

‘তাপ’ (বিশেষ্য পদ) তৎসম পদ। ‘তাপ’ অর্থ উষ্ণতা বা উত্তাপ। এর পূর্বে ‘প্র’ বা ‘অনু’ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে প্রতাপ (প্র+তাপ) যার অর্থ পরাক্রান্ত বা বীরত্ব।
অনুতাপ (অনু+ তাপ) যার অর্থ অনুশোচনা বা আফসোস ইত্যাদি নতুন শব্দ গঠিত হয়েছে এবং ‘তাপ’ শব্দের অর্থের পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

আবার ‘প্র’ বা ‘অনু’ এর নিজস্ব কোন অর্থ নেই বা এগুলো স্বাধীনভাবে কোন বাক্যেও ব্যবহৃত হতে পারে না। তাই ভাষাবিদগণ এরূপ অব্যয়সূচক শব্দ বা শব্দাংশের নাম দিয়েছেন ‘উপসর্গ’। যেমন- ‘হার’ একটি শব্দ। এর সাথে উপ, আ, প্র, বি উপসর্গ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে উপহার, আহার, প্রহার, বিহার শব্দ গঠিত হয়েছে। এভাবে উপসর্গের সাহায্যে নতুন নতুন শব্দ গঠন করে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভার সমৃদ্ধি লাভ করেছে।

Also Read: Preposition কাকে বলে

অতএব, কতকগুলো অব্যয় নামবাচক বা কৃদান্ত শব্দের পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে এবং অর্থের পরির্বতন সাধন করে, এগুলোকে উপসর্গ বলে।

অশোক মুখোপাধ্যায়ের মতে, “বাংলা ভাষায় কিছু অব্যয় আছে যারা ধাতু বা শব্দের আগে যুক্ত হয়ে তাদের অর্থ বদল করে দেয়। এদেরই বলা হয় উপসর্গ।”

ড. মুহাম্মদ এনামুল হকের মতে, “যেসব অব্যয় শব্দ কৃদান্ত বা নামপদের পূর্বে বসে শব্দগুলোর অর্থের সংকোচন, সম্প্রসারণ বা অন্য কোন পরিবর্তন সাধন করে, ঐ সব অব্যয় শব্দকে বাংলা ভাষায় উপসর্গ বলে।”

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “সংস্কৃতে কতগুলো অব্যয় শব্দ আছে, এগুলো ধাতুর পূর্বে বসে এবং ধাতুর মূল ক্রিয়ার গতি নির্দেশ করে এর অর্থের প্রসারণ, সঙ্কোচন বা অন্য পরিবর্তন আনয়ন করে দেয়। এরূপ অব্যয় শব্দকে উপসর্গ বলে।”

উপসর্গ কত প্রকার ও কি কি?

উপসর্গ তিন প্রকার: যেমন-

(১) বাংলা উপসর্গ
(২) সংস্কৃতি উপসর্গ
(৩) বিদেশ উপসর্গ

১) বাংলা উপসর্গ

বাংলা উপসর্গ মোট ২১টি।

এগুলো হলো— অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আত, আন, আব, ইতি, ওন, কদ, কু, নি, পাতি, বি, তব, রাম, স, সা, সু, হা।

উদাহরণ:

অ — অকাজ, অমিল, অপয়া।
অনা — অনাচার, অনাবৃষ্টি, অনাদায়
অঘা — অঘারাম, অঘাচণ্ডী ইত্যাদি।

২) সংস্কৃত উপসর্গ

সংস্কৃত উপসর্গ ২০টি:

যেমন: প্র, পরা, অপ, সম, নি, অব, অনু, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অভি, অতি, আপ, উপ, আ।

উদাহরণ:

প্র — প্রহার, প্রকৃষ্ট, প্রবাহ, প্রবোধ
পরা — পরাজয়, পরাহত
অপ — অপমান, অপবাদ, অপব্যাখ্যা ইত্যাদি।

৩) বিদেশি উপসর্গ

বাংলা ভাষায় ব্যবহূত বিদেশি উপসর্গের মধ্যে ফরাসি, ইংরেজি উপসর্গের ব্যবহার বেশি দেখা যায়।

যেমন:

ফরাসি উপসর্গ:

আম—আমদরবার। আমপাবলিক।
কার — কারখানা, কারসাজি, কারবার।
গর — গরমিল, গরহাজির।
বদ — বদনাম, বদমেজাজি, বদহজম ইত্যাদি।

ইংরেজি উপসর্গ:

ফুল — ফুলপ্যান্ট, ফুলবাবু, ফুলফ্রি।
হাফ — হাফশার্ট, হাফটিকিট, হাফফ্রি ইত্যাদি।

তো আজকে আমরা দেখলাম যে উপসর্গ কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment