যত বড় হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা -ভাবসম্প্রসারণ [নতুন]

আজকের আমরা ”যত বড় হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা” ভাবসম্প্রসারণটি পড়ব। ভাবসম্প্রসারণ পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপৃর্ণ। বিশেষ করে এই ভাবসম্প্রসারণটি খুবই গুরুত্বপৃর্ণ।

যত বড় হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা -ভাবসম্প্রসারণ [নতুন]

যত বড় হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা

মূলভাব: অলীক কল্পনায় গা ভাসিয়ে না দিয়ে তুচ্ছ বাস্তবের মাঝে স্বস্তির নীড় রচনা করাই শ্রেয়। 

সম্প্রসারিত ভাব: মানষ সহজাত প্রবৃত্তির বশে অজানাতে জানতে চায়, অজেয়কে জয় করতে চায় আর অধরাকে ধরতে চায়। তাই অধরা সৌন্দর্যের মাধুরী মানুষকে চিরকাল আকৃষ্ট ও মুগ্ধ করেছে। প্রতিনিয়ত সে অধরাকে নিয়ে কল্পনা ও স্বপ্ন বিলাসে মত্ত থেকেছে, বিভোর হয়েছে প্রত্যাশা আর আকাক্সক্ষায়। সুদূর আকাশের সুবিশাল ক্যানভাসে মেঘ – বৃষ্টি ও আলো-ছায়ার খেলায় সৃষ্টি ইন্দ্রধনুর অনুপম ও অনবদ্য বর্ণচ্ছাটা মর্তেও মানুষকে বিমোহিত করেছে। কিন্তু নিরন্তর প্রাণান্ত প্রচেষ্টার পরও সেই অপার সৌন্দর্য মানুষের ধারছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। আকাশের ইন্দ্রধনু বা রংধনুর সৌন্দর্য যত মনোমুগ্ধ করই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত তা সুদূরের ক্ষণস্থয়ী এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । বাস্তবের পৃতিবীতে তা চির অধরা। সুতরাং দেখা যায়, অপার্থিব বস্তুর সৌন্দর্য ও বর্ণিলতা যত হৃদয়গ্রাহী ও মনোলোভাই হোক না কেন, পার্থিব মানুষের জীবন বস্তবতার সাথে তার কোনো মিল নেই। তাই যে মানুষ দৈনন্দিক জীবন বাস্তবতার বন্ধুর পথ পরিক্রমায় সমৃদ্ধ আগামীর সফল পথ রচনা করতে চায়, তার কাছে অবাস্তব কল্পনা বিলাসের চেয়ে বাস্তবের তুচ্ছাতিত্চ্ছু বিষয়ও অনেক বেশি গুরুত্ববহ, অনেক বেশি কাম্য। অধরা সৌন্দর্য যত নান্দনিকই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত মানুষ বাস্তবের সৌন্দর্যকে গুরুত্ব না দিয়ে পারে না। বাস্তববাদী কবি নিজেও জানেন, রোমান্টিক স্বপ্ন চোখে নিয়ে অবাস্তব ও অধরার অপার সৌন্দর্য্যকে ঘিরে হয়তো ক্ষণিকার ভাবালুতায় নিমগ্ন হওয়া যায়, কি›তু বাসÍবের গতিশীল জীবনে তা নিতান্তই অর্থহীন। বরং কখনো তা বাস্তব জীবনকে হতাশায় মুষড়ে দেয়. করে দেয় স্থবির। মন্তব্য: বাস্তবতার ত্রিসীমায় অকস্থিত বস্তুর যথাযথ মূল্যয়ন করতে পারলে জীবন সার্থক হয়ে উঠে। পক্ষান্তরে, অবাস্তব ও অধরা বস্তুর আকাক্সক্ষায় নিমগ্ন উদাসীন মানুষ একসময় অতৃপ্তি ও হতাশায় ঘোলাজলে হাবুডুবু খেতে খেতে জীবন বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে অস্তিত্ব বিদীর্ন করা চিৎকারে বলে উঠে।

অন্য বই থেকে বিকল্প

মূলভাব: অধরার সৌন্দর্যে মানুষ খুব বেশি মুগ্ধ হয়। সেটি ছুঁয়ে দেখতে চায়। কিন্তু তা অলীক কল্পনা। বাস্তব আর কল্পনা এক নয়।

সম্প্রসারিত ভাব: প্রকৃতিগতভাবে মানুষ সুন্দরের পূজারি। আর তাই ইন্দ্রধনু তার কাছে বেশ দৃষ্টিনন্দন। এর নাম রংধনু (Rainbow) বা রামধনু। রংধনু বা ইন্দ্রধনুতে রয়েছে বিচিত্র রঙের সমারােহ। আমরা মুগ্ধ চোখে তা। দেখি কিন্তু সেটি কাছে পাওয়ার আশা বৃথা। কাজেই ভালােলাগার এ অনুভূতি কখনােই ভালােবাসায় রুপান্তরিত কিংবা উত্তীর্ণ হয় না। আমাদের হাতের নাগালেই প্রজাপতির মতাে সুন্দর একটি প্রাণী থাকে, অথচ আমাদের মনােযােগ কিনা ইন্দ্রধনুর দিকে! যা পাওয়া যাবে না, দেখা যাবে না কাছাকাছি, ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না- তার প্রতি ভালােলাগার অনুভূতি থাকলেও ভালােবাসা কাজ করে না। আমরা তাই ইন্দ্রধনু নয়, প্রজাপতিকেই ভালােবাসি। কাছের বস্তুকে মানুষ ভালােবাসবে, এটিই স্বাভাবিক। এর মধ্যেই নিহিত থাকে প্রকৃত প্রেম ও মহত্ত্ব। প্রজাপতির সৌন্দর্য তাই আমাদের ইন্দ্রধনুর চেয়ে বেশি মুগ্ধ করে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, দূরের দুর্লভ বস্তুর প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ দেখিয়ে কাছের সৌন্দর্যকে উপেক্ষা বা অবহেলা করা মােটেও সমীচীন নয়। আকাশ-কুসুম কল্পনা না করে সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে মনস্থির করা উচিত। কাছের সৌন্দর্যকে যেভাবে নাগালের মধ্যে পাওয়া যায়, তেমনই তার সৌন্দর্যকে প্রাণভরে উপভােগ করা যায়।

মন্তব্য: মনােরম ইন্দ্রধনুর চেয়ে ক্ষুদ্র প্রজাপতিই আমাদের বেশি আনন্দ দিতে সক্ষম।

Also Read: যতনে রতন মিলে, সারসত্য এই

আশা করি তোমাদের এই ভাবসম্প্রসারণটি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করবে।

Leave a Comment