হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে? | হাইড্রোজেন বন্ধন গঠিত হওয়ার শর্ত

হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে,হাইড্রোজেন বন্ধন গঠিত হওয়ার শর্ত,হাইড্রোজেন বন্ধন
হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে

হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে?

যে বলের প্রভাবে কোনো অণুর হাইড্রোজেন পরমাণু একই অথবা সন্নিহিত অণুদ্বয়ের দুটি তড়িৎ ঋণাত্মক পরমাণুর মধ্যে একটি সেতু রচনা করে তাকে হাইড্রোজেন বন্ধন বলে।

OR: হাইড্রোজেন পরমাণু যখন অধিক তড়িৎ ঋণাত্মক মৌল (যেমন- F, O, N ইত্যাদি) এর সাথে সমযোজী যৌগ গঠন করে, তখন তড়িৎ ঋণাত্মকতার পার্থক্যের কারণে H-প্রান্তে আংশিক ধনাত্মক চার্জ ও তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলের প্রান্তে আংশিক ঋণাত্মক চার্জের সৃষ্টি হয়ে ডাইপোল গঠন করে, একাধিক ডাইপোলের মধ্যকার আকর্ষণ বলের ফলে সৃষ্ট বন্ধনকে হাইড্রোজেন বন্ধন বলে। সাধারণত বিন্দু রেখা (……..) দ্বারা হাইড্রোজেন বন্ধন দেখানো হয়।

হাইড্রোজেন বন্ধন তৈরি হয় দুর্বল থেকে মাঝারি শক্তির স্থির বৈদ্যুুতিক আকর্ষণ বলের জন্য। এর উৎস কতিপয় সমযোজী বন্ধনযুক্ত হাইড্রোজেন পরমাণুর সাথে অন্য পরমাণুর নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড়ের আকর্ষণ। যখন হাইড্রোজেন পরমাণু অপেক্ষাকৃত উচ্চ ইলেকট্রোনেগেটিভ কোন মৌল (যেমন: ফ্লোরিন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন) এর সাথে সমযোজী বন্ধন গঠন করে কেবল তখনই এরূপ বন্ধন গঠিত হয়।

পানি হাইড্রোজেন বন্ধন বিশিষ্ট যৌগের একটি প্রকৃত উদাহরণ। এটি একটি পোলার অণু। হাইড্রোজেনের তুলনায় অক্সিজেন অনেক বেশি ইলেকট্রোনেগেটিভ মৌল বলে এটি O-H বন্ধন সৃষ্টিকারী ইলেকট্রন জোড়কে নিজের দিকে টেনে নেয়।

ফলে অক্সিজেন পরমাণুতে আংশিক ঋণাত্মক চার্জ এবং হাইড্রোজেন পরমাণুতে আংশিক ধনাত্মক চার্জ উৎপন্ন হয়। একটি পানির অণুর δ+ চার্জযুক্ত হাইড্রোজেন পরমাণুকে অপর একটি পানির অণুর δ- চার্জযুক্ত অক্সিজেন পরমাণু স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা আকর্ষণ করে। এভাবে অনেকগুলি পানির অণু একে অপরের সাথে একটি মাঝারি শক্তির বল দ্বারা যুক্ত হয়। হাইড্রোজেন বন্ধনকে একটি বিন্দু রেখা (………..) দ্বারা নির্দেশ করা হয়।

Also Read: তড়িৎ চালক শক্তি কাকে বলে

যে পরমাণুটির সঙ্গে H বন্ধন গঠিত হবে সেই পরমাণুটির উপর অন্তত একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় থাকবে। কেবলমাত্র F, O, N পরমাণু উপর্যুক্ত শর্তগুলো পূরণ করে বিধায়, শুধু এই পরমাণুগুলো কার্যকরী হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনে সক্ষম। ক্লোরিন এবং নাইট্রোজেনের তড়িৎ ঋণাত্মকতা (3.0) সমান হওয়া সত্ত্বেও ক্লোরিন প্রকৃত পক্ষে স্থায়ী হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করতে পারে না। কিন্তু নাইট্রোজেন পারে। এর কারণ ক্লোরিন পরমাণুর আকার নাইট্রোজেন পরমাণুর আকার অপেক্ষা বড়।

হাইড্রোজেন বন্ধন গঠিত হওয়ার শর্ত

  • হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনকারী অণুর মধ্যে অন্তত 1টি H পরমাণু থাকা দরকার, যা উচ্চ তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলের পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত।
  • যে পরমাণুটির সঙ্গে H বন্ধন গঠিত হবে সেই পরমাণুটির উপর অন্তত একটি নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় থাকবে। কেবলমাত্র F, O, N পরমাণু উপর্যুক্ত শর্তগুলো পূরণ করে বিধায়, শুধু এই পরমাণুগুলো কার্যকরী হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনে সক্ষম। ক্লোরিন এবং নাইট্রোজেনের তড়িৎ ঋণাত্মকতা (3.0) সমান হওয়া সত্ত্বেও ক্লোরিন প্রকৃত পক্ষে স্থায়ী হাইড্রোজেন বন্ধন গঠন করতে পারে না। কিন্তু নাইট্রোজেন পারে। এর কারণ ক্লোরিন পরমাণুর আকার নাইট্রোজেন পরমাণুর আকার অপেক্ষা বড়।
  • তড়িৎ ঋণাত্মক মৌলের পরমাণুটিকে আকারে ছোট হতে হবে।

তো আজকে আমরা দেখলাম যে হাইড্রোজেন বন্ধন কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment