আজকে আমরা জানবো উপাত্ত কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
উপাত্ত কাকে বলে?
গণনা বা পরিমাপের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যই হলো উপাত্ত। যেমন– ৭ম শ্রেণির ৪ জন ছাত্রের বয়স হলো ১২ বছর, ১৩ বছর, ১৪ বছর, ১৩ বছর ৬ মাস। এ তথ্যটি উপাত্ত, কারণ এদের সংখ্যায় গণনা করা যায়। আবার, সেলিম সবল খেলোয়াড় কিন্তু জয়নাল দুর্বল খেলোয়াড়। এক্ষেত্রে এ তথ্যটি সংখ্যায় গণনা করা যায় না। এজন্য এটি উপাত্ত নয়। নামবাচক ও গুণবাচক তথ্য যেমন ধর্ম, বর্ণ, ভালো-মন্দ ইত্যাদি পরিসংখ্যানের উপাত্ত নয়।
উপাত্ত কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ উপাত্ত প্রধানত দুই প্রকার। যথা–
- প্রাথমিক উপাত্ত বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত।
- মাধ্যমিক উপাত্ত বা পরোক্ষ উপাত্ত।
প্রাথমিক উপাত্ত বা প্রত্যক্ষ উপাত্ত
উৎস থেকে সরাসরি যে উপাত্ত সংগৃহীত হয় তাকেই প্রাথমিক উপাত্ত বলা হয়। যেমন, বার্ষিক পরীক্ষায় ৭ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ১০ জন শিক্ষার্থীর বাংলায় প্রাপ্ত নম্বর হলো– ৭৫, ৮০, ৬৫, ৭৮, ৭০, ৮২, ৭৭, ৭৫, ৭৬, ৬৮। সরাসরি সংগৃহীত বিধায় এ উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেশি।
মাধ্যমিক উপাত্ত বা পরোক্ষ উপাত্ত
পরোক্ষ উৎস থেকে সংগৃহীত উপাত্ত হচ্ছে মাধ্যমিক উপাত্ত। যেমন– ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জুলাই মাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যথাক্রমে ২৯°C, ৩২°C, ৩১°C, ও ৩০°C। এ তথ্য সরাসরি সংগ্রহ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে, কোনো প্রতিষ্ঠান হতে তা সংগ্রহ করতে হবে। এ উপাত্ত সরাসরি সংগ্রহ করা যায় না বলে এর নির্ভরযোগ্যতা অনেক কম।
অবিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে
উপরে বর্ণিত শিক্ষার্থীদের গণিতে প্রাপ্ত নম্বর গুলো এলোমেলো ভাবে দেওয়া আছে। তাই এগুলো হলো অবিন্যস্ত উপাত্ত। নম্বরগুলো মানের কোন ক্রমে সাজানো নেই। অর্থাৎ উপাত্তগুলো যদি কোন প্রকার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সাজানো না হয় তখন তাকে অবিন্যস্ত উপাত্ত বলে।
বিন্যস্ত উপাত্ত কাকে বলে
সংগৃহীত উপাত্ত কোনো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বা মানের উর্ধ্বক্রম বা অধক্রম অনুসারে সাজানো হলে তাকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে।
৩৬, ৪৫, ৪৫, ৪৮, ৫৪, ৫৫, ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৮, ৭০, ৭৩, ৭৬, ৭৬, ৮৭, ৯,০, ৯৩, ৯৭
এভাবে সাজানো উপাত্তসমূহকে বিন্যস্ত উপাত্ত বলে।
উপাত্তের প্রকারভেদ
উপাত্তের বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে উপাত্তকে সাধারণত দুভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ
- গুণবাচক (Qualitative) উপাত্ত
- পরিমাণবাচক (Quantitative) উপাত্ত।
গুণবাচক (Qualitative) উপাত্ত
কোনো অনুসন্ধ্যানে গবেষণাকারী কোনো বস্তু বা ব্যক্তির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্যকে আছে বা নেই দ্বারা চিহ্নিত করে এবং ঐ বৈশিষ্ট্য কত ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে আছে বা নেই নির্ণয় করলে যে উপাত্ত পাওয়া যায় তাকেই গুণবাচক উপাত্ত বলা হয়।
কোনো কৃষিবিদ ক্ষেতের পোকা-মাকড় মারার জন্য ঔষধ ছিটিয়েছেন এবং লক্ষ্য করেছেন ঐ ঔষধ কার্যকরী কি-না। এক্ষেত্রে কার্যকর বা কার্যকর নয়, এমন উপাত্তকে গুণবাচক উপাত্ত বলে। আবার কোন অনুসন্ধ্যানে যদি জানতে চাওয়া হয় যে কত লোকের চুল সাদা বা কতজনের অন্য রঙের চুল আছে এ সমস্ত ক্ষেত্রে যে উপাত্ত পাওয়া যায় সেগুলোকে বলা হয় গুণবাচক উপাত্ত।
পরিমাণবাচক (Quantitative) উপাত্ত
যখন কোনো গবেষক কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর বৈশিষ্ট্যকে পরিমাণগতভাবে পরিমাপ করে তখন সে উপাত্তকে পরিমাণবাচক উপাত্ত বলে।
উদাহরণস্বরূপ, বিভিন্ন লোকের বয়স, আয়, পারিবারিক জরিপে পরিবারের লোক সংখ্যা, আবাদী জমির পরিমাণ, গৃহপালিত পশুর পরিমাণ, উৎপন্ন ফসলের পরিমাণ ইত্যাদি পরিমাপযোগ্য উপাত্তকে পরিমাণবাচক উপাত্ত বলে।
তথ্য এবং উপাত্ত এর পার্থক্য
১. সুনির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত কাঁচামাল সমূহকে ডেটা বা উপাত্ত বলে। অন্যদিকে ডেটাকে প্রক্রিয়াকরণ করে যে অর্থবহ ফলাফল পাওয়া যায়, তাকে তথ্য বলে।
২. ডেটা হচ্ছে প্রক্রিয়াকরণের পূর্বের অবস্থা। তথ্য হচ্ছে প্রক্রিয়াকরণের পরের অবস্থা।
৩. উপাত্ত সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। অন্যদিকে তথ্য সরাসরি ব্যবহার করা যায়।
৪. উপাত্ত দ্বারা যে কোন বিষয়ে পুরোপুরি ভাবার্থ প্রকাশ পায় না। অন্যদিকে তথ্য দ্বারা যে কোন বিষয়ে পুরোপুরি ভাবার্থ প্রকাশ পায়।
৫. উপাত্ত তথ্যের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডেটা প্রক্রিয়াকরণের পর তথ্যে রূপান্তরিত হয়।
৬. সব উপাত্তই তথ্য নয়। অন্যদিকে সব তথ্যই উপাত্ত হতে পারে।
৭. উপাত্ত রূপান্তরের সময় সমস্ত অপ্রাসঙ্গিক তথ্য এবং পরিসংখ্যান বাছাই করা হয়। কিন্তু তথ্য সবসময় তার প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যাশার জন্য সুনির্দিষ্ট।
Also Read: নক্ষত্র পতন কাকে বলে?
তো আজকে আমরা দেখলাম যে উপাত্ত কাকে বলে?,Opatto Kake Bole?,উপাত্ত কত প্রকার ও কি কি? এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয়। যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!