ওশিয়ানিয়া অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর [নতুন]

ওশিয়ানিয়া অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর: আমরা আজকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। এরকম পোস্ট আমদের মতো কেউ করতে পারবে না। আমরা হলাম official-result.com. তাই আমাদের ওয়েবসাইটকে কখনো ভুলে জাবেন না। 😉😉

ওশিয়ানিয়া অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর

ওশিয়ানিয়া অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়ভিত্তিক সংজ্ঞা:

1. ওশিয়ানিয়া : আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাদেশ হল ওশিয়ানিয়া। এই মহাদেশ প্রায় দশ হাজার দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে।

2. অস্ট্রেলেশিয়া: ওশিয়ানিয়া মহাদেশের অন্তর্গত অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডকে একত্রে বলে অস্ট্রেলেশিয়া বলে।

3. মেলানেশিয়া : মেলা শব্দের অর্থ কালো আর নেশিয়া শব্দের অর্থ ভূখণ্ড বা দেশ। এখানকার অধিবাসীদের শরীরে মেলানিনের আধিক্যের জন্য মেলানেশিয়া নামকরণ হয়েছে। নিউগিনি, সলোমন, ফিজি, নরফোক, নিউ ক্যালিডোনিয়া, নিউ হেব্রিডিজ প্রভৃতি দ্বীপ নিয়ে মেলানেশিয়া গঠিত।

4. মহিক্রোনেশিয়া: মাইক্রো শব্দের অর্থ ক্ষুদ্র। গুয়াম, মার্শাল, নাউরু, কিরিবাটি প্রভৃতি ছোটো ছোটো দ্বীপ নিয়ে মাইক্রোনেশিয়া গঠিত।

5. পলিনেশিয়া : পলি শব্দের অর্থ বহু। ওশিয়ানিয়ার একেবারে পূর্ব দিকে হাওয়াই, সামোয়া, টোঙ্গা, কুক, ইস্টার, পিটকেয়ার্ন, তাহিতি প্রভৃতি অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে পলিনেশিয়া গঠিত।

6. মাউন্ট কোসিয়াস্কো: অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব দিক বরাবর উত্তরদক্ষিণে বিস্তৃত হয়েছে একটি প্রাচীন ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি। এর নাম গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ । এই পর্বতশ্রেণি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিত। এইসব পর্বতশ্রেণির মধ্যে নিউ ইংল্যান্ড রেঞ্জের মাউন্ট কোসিয়াস্কো অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এর উচ্চতা 2230 মিটার।

7. আর্টিজিও কৃপ: কার্পেন্টারিয়া নিম্নভূমি অঞ্চলে শিলাস্তরের আকৃতি এমনই (গামলার মতো) যে কূপ খুঁড়লে মাটির নীচের জল পাম্পের সাহায্য ছাড়াই বাইরে বেরিয়ে আসে। এই ধরনের কূপ আর্টিজিও কূপ নামে পরিচিত।

৪. গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ: অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূল বরাবর সমুদ্রের মধ্যে সমান্তরালে অবস্থান করছে পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ।

9. ক্যান্টারবেরি সমভূমি: নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের দক্ষিণ আল্পস হল প্রধান পর্বতশ্রেণি। এই পর্বতশ্রেণির মাউন্ট কুক হল নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এই দ্বীপের পূর্ব উপকূল বরাবর গড়ে উঠেছে বিখ্যাত ক্যান্টারবেরি সমভূমি।

10. মাউন্ট উইলহেলম : পাপুয়া নিউগিনির মাউন্ট উইলহেলম হল ওশিয়ানিয়া মহাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, এর উচ্চতা 4509 মিটার।

11. অস্ট্রেলিয়ার হ্রদ : অস্ট্রেলিয়ার মধ্য ও পশ্চিম অংশে অসংখ্য হ্রদ রয়েছে। তবে বেশিরভাগ হ্রদই শুষ্ক ও লবণাক্ত। এদের মধ্যে মধ্যভাগের আয়ার, টরেন্স আর পশ্চিমের মরুভূমির ম্যাকে, উইলস উল্লেখযোগ্য।

12. ভাউপো হ্রদ: নিউজিল্যান্ডের পার্বত্য অঞ্চলে অসংখ্য হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ আছে। তাউপো হল এই হ্রদগুলির মধ্যে বৃহত্তম।

13. পার্কল্যান্ড সাভানা: অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে কম বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে বড়ো বড়ো ঘাস জন্মায়। অস্ট্রেলিয়ার এই অঞ্চল পার্কল্যান্ড সাভানা নামে পরিচিত। এই তৃণভূমির মাঝে মাঝে ইউক্যালিপ্টাস, জুরা-জাতীয় গাছ দেখা যায়।

14. ডাউনস: গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জের পশ্চিম দিকে মারে-ডার্লিং অববাহিকায় ছোটো ছোটো ঘাসের বিশাল তৃণভূমি দেখা যায়। এই তৃণভূমি ডাউনস নামে পরিচিত।

15. মারে-ডার্লিং অববাহিকা: অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে রয়েছে গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ এবং পশ্চিমে রয়েছে মালভূমি অঞ্চল। এদের মাঝে অবস্থিত মধ্যভাগের সমভূমি। এই সমভূমির দক্ষিণ অংশে (অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বে) মারে নদী আর তার প্রধান উপনদী ডার্লিং এবং অন্যান্য উপনদী যে সমভূমি গঠন করেছে, তা মারেডার্লিং অববাহিকা নামে পরিচিত।

16. জ্যাকোস :
 মারে-ডার্লিং অববাহিকার পশুখামারগুলি খুব বড়ো। আর এইসব পশুখামারগুলিতে যারা শ্রমিকের কাজ করে, তাদের জ্যাকোস বলে।

17. রুপোর শহর : মারে-ডার্লিং অববাহিকা অঞ্চলে খনিজ সম্পদ সেভাবে পাওয়া যায় না। অববাহিকার প্রান্তবর্তী অঞ্চলে সোনা, রুপো, তামা, সিসা, টিন পাওয়া যায়। ব্রোকেন হিলে রুপো, তামা উত্তোলিত হয়। তাই ব্রোকেন হিলকে রুপোর শহর বলা হয়।

ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি: প্রতিটি প্রশ্নের মান 5

1. ওশিয়ানিয়া অভিযান সম্পর্কে কী জান?

উঃ
 ওশিয়ানিয়া অভিযান

ইউরোপীয়দের অভিযানের আগে ওশিয়ানিয়ার দ্বীপগুলি সাধারণ মানুষের নজরের বাইরে ছিল। ওইসব দ্বীপগুলিতে মাওরি, অ্যাবরিজিন্যাল আদিবাসীরা বসবাস করত। এরপর শুরু হয় ওশিয়ানিয়াকে জানার জন্য বিভিন্ন অভিযান। ওশিয়ানিয়াকে পৃথিবীর সকলের কাছে তুলে ধরার অভিযানগুলি ছিল— 

1.ফার্দিনান্দ ম্যাগেলানের অভিযান: ষোড়শ শতাব্দীতে ফার্দিনান্দ ম্যাগেলান পৃথিবী পরিভ্রমণের সময় ম্যারিনাস-সহ আরও কয়েকটি দ্বীপের সন্ধান পান।

2. এবেল তাসমানের অভিযান: 1644 সালে ডাচ নাবিক এবেল তাসমান অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, টোঙ্গা ও ফিজি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছোন।

3. জেমস কুকের অভিযান : 1770 সালে জেমস কুক অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল (সিডনি) এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন দ্বীপগুলিতে পা রাখেন।

4. ব্রিটিশ রয়াল নৌবাহিনীর উপনিবেশ স্থাপন: 1789 সালে ব্রিটিশ রয়াল নৌবাহিনীর বিদ্রোহীরা এখানকার পিটকেয়ার্ন দ্বীপে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপরে নিউজিল্যান্ড, ফিজি, অস্ট্রেলিয়ায় ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপিত হয়।

5. ফরাসিদের উপনিবেশ স্থাপন :
 ব্রিটিশদের সাথে সাথে ফরাসিরাও কয়েকটি দ্বীপ দখল করে উপনিবেশ স্থাপন করে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে।

6. সোনার খনি আবিষ্কার ও ইউরোপীয়দের আগমন : ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি থেকে অস্ট্রেলিয়ায় সোনার খনি আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ থেকে দলে দলে মানুষ এখানে ভিড় করতে থাকে।

2. ওশিয়ানিয়া মহাদেশের আঞ্চলিক বিভাগগুলির বিবরণ দাও।

উঃ
 ওশিয়ানিয়া মহাদেশের অন্তর্গত দ্বীপগুলিকে চারটি আঞ্চলিক বিভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা— 

1. অস্ট্রেলেশিয়া: ওশিয়ানিয়ার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে একত্রে অস্ট্রেলেশিয়া (Australasia) বলে। অস্ট্রাল = দক্ষিণ এবং এশিয়া – দেশ বা ভূখণ্ড অর্থাৎ দক্ষিণের দেশ)। এই অঞ্চলটি ওশিয়ানিয়া মহাদেশের প্রায় 90 শতাংশ স্থান দখল করে আছে।

2. মেলানেশিয়া: 
মেলানেশিয়া (Melanesia) শব্দের অর্থ Black Lands বা কালো ভূখণ্ড বা কালো দেশ। মেলা শব্দের অর্থ কালো এবং নেশিয়া শব্দের অর্থ ভূখণ্ড বা দেশ। এখানকার অধিবাসীদের শরীরে মেলানিনের আধিক্যের জন্য এইরকম নামকরণ হয়েছে। নিরক্ষরেখা ও মকরক্রান্তিরেখার মাঝখানে পাপুয়া নিউগিনি থেকে পূর্বে ফিজি দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত (অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব দিকে) দ্বীপগুলি মেলানেশিয়া নামে পরিচিত। যেমন— নিউগিনি, সলোমন, ফিজি, নরফোক, নিউ ক্যালিডোনিয়া, নিউ হেব্রিডিজ, ভানুয়াতু, ক্রুজ, বিসমার্ক প্রভৃতি দ্বীপ এবং দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে মেলানেশিয়া গঠিত।

3. মাইক্রোনেশিয়া: মেলানেশিয়ার উত্তর-পূর্ব দিকে নিরক্ষরেখা ও কর্কটক্রান্তিরেখার মধ্যবর্তী স্থানে মাইক্রোনেশিয়া (Micronesia) অবস্থিত। গুয়াম, মার্শাল, নর্দার্ন মারিয়ানা, নাউরু, কিরিবাটি, পালাউ প্রভৃতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ ও দ্বীপপুঞ্জের সমষ্টিকে একসঙ্গে মাইক্রোনেশিয়া বলে। মাইক্রো শব্দের অর্থ ক্ষুদ্র অর্থাৎ small lands। মাইক্রোনেশিয়ার সব দ্বীপই প্রবাল দ্বীপের অন্তর্গত।

4. পলিনেশিয়া: ওশিয়ানিয়া মহাদেশের একেবানারে পূর্বদিকের দ্বীপসমূহ (অধিকাংশ পশ্চিম গোলার্ধে অবস্থিত ) পলিনেশিয়া নামে পরিচিত (পলি শব্দের অর্থ বহু অর্থাৎ many lands)। এখানকার দ্বীপ ও দ্বীপপুঞ্জের সংখ্যা অসংখ্য বলে এইরকম নামকরণ হয়েছে। পলিনেশিয়া অন্তর্গত দ্বীপরাষ্ট্রগুলি হল হাওয়াই , সময়া , টোঙ্গা, ইস্টার,পিটকেয়ার্ন, তাহিতি , তুভালু, প্রভৃতি। 

আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। “.ওশিয়ানিয়া অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর” এরকম আরো অনেক বিষয় জানতে হলে অব্যশয় আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে ভুলবেন না। ধন্যবাদ ❤

Leave a Comment