জলবায়ু অঞ্চল সহায়িকা অষ্টম শ্রেণী প্রশ্নোত্তর [নতুন]

জলবায়ু অঞ্চল সহায়িকা অষ্টম শ্রেণী প্রশ্নোত্তর: আমরা আজকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। এরকম পোস্ট আমদের মতো কেউ করতে পারবে না। আমরা হলাম official-result.com. তাই আমাদের ওয়েবসাইটকে কখনো ভুলে জাবেন না। 😉😉

জলবায়ু অঞ্চল সহায়িকা অষ্টম শ্রেণী প্রশ্নোত্তর [নতুন]

জলবায়ু অঞ্চল সহায়িকা অষ্টম শ্রেণী প্রশ্নোত্তর

অধ্যায়ভিত্তিক সংজ্ঞা

1. জলবায়ু অঞ্চল : ভূপৃষ্ঠের কোনাে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জলবায়ুর উপাদানগুলির (উষ্ণতা , আর্দ্রতা, বায়ুর চাপ, বায়ুর গতিবেগ, মেঘাচ্ছন্নতা, বাষ্পীভবন ইত্যাদি) বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতি মোটামুটি একই রকম হলে, সেই অঞ্চলকে জলবায়ু অঞ্চল (Climate Zone) বলে।

2. জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক : কোনাে স্থানের অক্ষাংশ, উচ্চতা, সমুদ্র থেকে দূরত্ব, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রস্রোত প্রভৃতি জলবায়ুকে বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, এরাই হল জলবায়ুর নিয়ন্ত্রক।

3. পরিবর্তনশীল অঞ্চল : দুটি ভিন্ন জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যে একটি পরিবর্তনশীল অঞ্চল (Transitional Zone) থাকে, যেখানে একটি জলবায়ু অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য ধীরে ধীরে অপর অঞ্চলে মিশে যায়।

4. নিরঞ্জীয় জলবায়ু অঞ্চল: নিরক্ষরেখার দু-পাশে সাধারণত 5°-10° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে উন্নতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সারাবছরই অত্যন্ত বেশি। এই জলবায়ু অঞ্চলকে নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল বলা হয়।

5. ক্রান্তীয় শীতকাল : নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা বেশ কমে যায় (25°সে)। তাই নিরক্ষীয় অঞ্চলের রাত্রিকে ক্রান্তীয় শীতকাল (Winters of tropics) বলে।

6. 4 0’clock rain: নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিন বিকেল 3 টে-4 টের সময় ঘন কিউমুলােনিম্বাস মেঘে আকাশ ঢেকে যায় এবং তা থেকে পরিচলন প্রক্রিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি হয়। এ কারণে একে 40’clock rain বলা হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলে বছরে প্রায় 250-300 দিন এভাবে বৃষ্টিপাত হয়।

7. চিরসবুজ অরণ্য: সারাবছর অত্যধিক উষ্ণতা  ও বৃষ্টিপাতের কারণে নিরক্ষীয় অরণ্যে সারাবছর গাছের পাতা সবুজ থাকে। তাই এই অরণ্যকে চিরসবুজ অরণ্য (Evergreen forest) বলে। 

৪ সেলভা: ব্রাজিলের আমাজন নদী অববাহিকার ঘন চিরসবুজ নিরক্ষীয় অরণ্য সেলভা (Selva) নামে পরিচিত।

9 চাদোয়া: নিরক্ষীয় অরণ্যের গাছগুলির পাতা বেশ চওড়া হয় এবং গাছগুলি ঠাসাঠাসিভাবে অবস্থান করে বলে এই অরণ্যের ওপরের অংশ চাঁদোয়া (Canopy)-র মতাে ঢেকে যায় । এর মধ্য দিয়ে সূর্যের আলাে অরণ্যের তলদেশে পৌঁছােতে পারে না।

10. মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল: উভয় গােলার্ধে 10-30° অক্ষাংশে মহাদেশের পূর্বে অবস্থিত দেশগুলিতে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যও পরিবর্তিত হয়। এই জলবায়ু অঞ্চলকে মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল বলে।

11. মৌসুমি বায়ুর বিস্ফোরণ: আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আর্দ্র জলীয় বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই হঠাৎ বজ্রবিদ্যুৎসহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। একেই মৌসুমি বায়ুর বিস্ফোরণ (Burst of Monsoon) বলে।

12. ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু : উভয় গােলার্ধে 30-40° অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত মহাদেশের পশ্চিমদিকে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু দেখা যায়। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী 16টি দেশে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর সর্বাধিক প্রভাব দেখা যায়।

13. হলিউড:
 মনােরম আবহাওয়া ও রােদ ঝলমলে পরিবেশের জন্য ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউড-এ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

14, তুন্দ্রা জলবায়ু : সুমেরুবৃত্ত এবং কুমেরুবৃত্ত অঞ্চলের এক বিশেষ ধরনের শীতল জলবায়ু হল তুন্দ্রা জলবায়ু। স্বল্পস্থায়ী শীতল গ্রীষ্মকাল এবং দীর্ঘস্থায়ী হিমশীতল শীতকাল এই জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

15. সুমেরু প্রভা ও কুমেরু প্ৰভা: তুন্দ্রা অঞ্চলে শীতকালে একটানা অন্ধকার রাতের আকাশে মাঝে মাঝে 2-3 ঘণ্টার জন্য ম্লান রংধনুর মতাে আলাের ছটা দেখা যায়। এই আলাের ছটাকে উত্তর গােলার্ধে সুমেরু প্রভা ও দক্ষিণ গােলার্ধে কুমেরু প্রভা বলে।

16. নিশীথ সূর্যের দেশ :
 গ্রীষ্মকালে নরওয়ের হ্যামারফেস্ট বন্দর ও আশেপাশের অঞ্চলে স্থানীয় সময় অনুযায়ী গভীর রাতের আকাশেও সূর্যকে দেখা যায়। তাই এই অঞ্চলকে নিশীথ সূর্যের দেশ বলে।

ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক পপ্রশ্নাবলিঃ পূর্ণমান 5

1. নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান, উন্নতা ও বৃষ্টিপাত সম্পর্কে আলােচনা করাে। 

উঃ নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান

নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 5°-10° অক্ষাংশের মধ্যে নিরক্ষীয় জলবায়ু দেখা যায়। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অববাহিকা, আফ্রিকার কঙ্গো বা জাইরে নদীর অববাহিকা, কলম্বিয়ার পশ্চিম উপকূল, মাদাগাস্কারের পূর্বাংশ, মধ্য আমেরিকার পানামা, কোস্টারিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের কিছু অঞ্চল, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস দ্বীপপুঞ্জ, শ্রীলঙ্কার দক্ষিণাংশ ও ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ প্রভৃতি দেশ বা অঞ্চলে নিরক্ষীয় বিরাজ করে।

নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের উষ্ণতা

সারাবছর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে বলে নিরক্ষীয় অঞলের উয়তা সবসময়ই বেশি থাকে। এখানে বার্ষিক গড় উষ্ণতা 27° সে এবং বার্ষিক উষ্ণতা প্রসর মাত্র 2 সে থেকে 3°সে। কখনাে কখনাে এই অঞলে দিনের বেলা উয়তা অনেক বেড়ে যায়, তবে রাতে উয়তা কিছুটা কমে যায় (25°সে) বলে নিরক্ষীয় অঞ্চলের রাত্রিকে ক্রান্তীয় শীতকাল নামে অভিহিত করা হয়। সারাবছর ধরে এখানে দিন ও রাতের পরিমাণ প্রায় সমান থাকে (12 ঘণ্টা)। এত কম বার্ষিক উষ্ণতা প্রসর পৃথিবীর অন্য কোনাে জলবায়ু অঞ্চলে দেখা যায় না।

নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের বৃষ্টিপাত

সারাবছর বেশি উষ্ণতা কারণে এই অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপ অবস্থান করে। স্থলভাগের থেকে জলভাগের পরিমাণ বেশি বলে বাতাসে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প মেশে। এই জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু ঊর্ধ্বাকাশে উঠে শীতল ও ঘনীভূত হয়ে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে পরিচলন পদ্ধতিতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি ঘটায়। প্রতিদিন বিকেল 3 টে-4টের সময় এই বৃষ্টিপাত হওয়ায় একে 40’clock rain বলে। এইভাবে এখানে বছরে প্রায় 250-300 দিন বৃষ্টি হয় এবং বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 200-250 সেমি। এই অঞ্চল নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় অর্থাৎ আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল (ITCZ) দ্বারা প্রভাবিত।

2. নিরক্ষীয় অঞ্চলের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখাে৷ 

উঃ নিরক্ষরেখার উভয়দিকে 5-10° অক্ষাংশের মধ্যে নিরক্ষীয় জলবায়ু দেখা যায়। এই প্রকার জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—

1. উষ্ণতা : (1) এখানে সূর্য সারাবছর লম্বভাবে কিরণ দেওয়ায় উয়তা সবসময় বেশি থাকে, ফলে এখানকার বার্ষিক গড় উয়তা প্রায় 27°সে-এর কাছাকাছি থাকে। (2) বার্ষিক উষ্ণতার প্রসর হয় 2°সে- 3°সে। (3) নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাতের দিকে উষ্ণতা কিছুটা কমে যাওয়ায় (প্রায় 25°সে) সামান্য শীত অনুভূত হয়। এই জন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলের রাত্রিকে ক্রান্তীয় শীতকাল (Winter of Tropics) বলা হয়।

2. দিনরাত্রির দৈর্ঘ্য: নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের আলাে সারাবছর ধরে লম্বভাবে পড়ায় দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্য প্রায় সমান থাকে (12 ঘন্টা)।

3. বায়ুচাপ: নিরক্ষীয় অঞলে চিরস্থায়ী নিম্নচাপ বলয় অবস্থান করে। সারাবছর উষ্ণতা বেশি থাকার কারণেই এই গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এই অঞল আন্তঃক্রান্তীয় অভিসরণ অঞ্চল (ITCZ) দ্বারা প্রভাবিত।

4. আর্দ্রতা: নিরক্ষীয় অঞলে জলভাগ বেশি ও সূর্যের আলাে লম্বভাবে পড়ে বলে জলের বাষ্পীভবনের হার বেশি হয়। সেজন্য বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক হয় ও আবহাওয়া স্যাঁতসেঁতে হয়।

5. বৃষ্টিপাত: অধিক উষ্ণতা এবং আদ্রর্তার জন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে আকাশ কিউমুলােনিম্বাস মেঘে ঢেকে যায় ও পরিচলন পদ্ধতিতে বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় বৃষ্টি হয়। এখানে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে 200-250 সেমি। প্রায় প্রতিদিন বিকেল 3 টে-4 টের সময় বৃষ্টিপাত হয় বলে একে 40’clock rain বলে।

6. ঋতুহীনতা:
 সূর্যরশ্মি প্রায় সারাবছর লম্বভাবে পড়ার জন্য নিরক্ষীয় অঞ্চলে মাত্র একটি ঋতুই দেখা যায়, তা হল গ্রীষ্মকাল।

আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। “.জলবায়ু অঞ্চল সহায়িকা অষ্টম শ্রেণী প্রশ্নোত্তর” এরকম আরো অনেক বিষয় জানতে হলে অব্যশয় আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে ভুলবেন না। ধন্যবাদ ❤

Leave a Comment