মানুষেরকার্যাবলী ও পরিবেশের অবনমন অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর: আমরা আজকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। এরকম পোস্ট আমদের মতো কেউ করতে পারবে না। আমরা হলাম official-result.com. তাই আমাদের ওয়েবসাইটকে কখনো ভুলে জাবেন না। 😉😉
মানুষেরকার্যাবলী ও পরিবেশের অবনমন অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর
অধ্যায়ভিত্তিক সংজ্ঞা:
1. হোমিওস্ট্যাটিক ব্যবস্থা (Homeostatic mechanism): হোমিওস্ট্যাটিক ব্যবস্থা হল সেই প্রাকৃতিক ব্যবস্থা যেখানে পরিবেশের কোনো অংশে ক্ষতি বা পরিবর্তন হলে পরিবেশ নিজেই তা পূরণ করে।
2. ইউরোপের শিল্পবিপ্লব: অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে তথা ইউরোপ মহাদেশে সভ্যতার অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে শিল্পবিপ্লব সংঘটিত হয়। শিল্পবিপ্লবের ফলে কৃষি, শিল্প, পরিবহণ, চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি ঘটতে থাকে। এর পাশাপাশি বাড়িঘর, কলকারখানা, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও শিল্পের প্রয়োজনে বনভূমি ধ্বংস হতে থাকে। প্রাকৃতিক সম্পদগুলির ব্যাপক ব্যবহার পরিবেশের ক্ষতি সাধন করতে থাকে।
3. পরিবেশদূষণ: প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কার্যের ফলে পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের দূষিত হওয়ার প্রক্রিয়া, যা পরিবেশের অবনমনকে ত্বরান্বিত করে, তাকে পরিবেশদূষণ বলে।
4. পরিবেশের অবনমন: পরিবেশের সামগ্রিক গুণমানের হ্রাস পাওয়াকে পরিবেশের অবনমন বলে।
5. আর্থ সামিট (Earth Summit): 1992 সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ে একটি সম্মেলন হয়েছিল, যা আর্থ সামিট (বসুন্ধরা সম্মেলন) নামে পরিচিত। এই সম্মেলনে 178টি দেশ ও প্রায় 30 হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল।
6. স্থিতিশীল উন্নয়ন: যে উন্নয়ন পদ্ধতির মাধ্যমে বর্তমানে প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও উন্নয়নের সাথে সাথে ভবিষ্যতের মানবসমাজের উন্নয়নের অগ্রগতিকে অব্যাহত রাখা যায়, তাকে বলে স্থিতিশীল উন্নয়ন।
7. চিপকো আন্দোলন: 1973 সালে উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল অঞ্চলের অধিবাসীরা অরণ্য বাঁচানোর জন্য গাছ জড়িয়ে ধরে গাছকে বাঁচানোর জন্য যে আন্দোলন করেছিল তাকেই চিপকো আন্দোলন বলে ।
ব্যাখ্যামূলক উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলি: প্রতিটি প্রশ্নের ম্যান 5
1. প্রকৃতিনির্ভর, প্রযুক্তিনির্ভর এবং সেবামূলক কাজের তালিকা তৈরি করো এবং এইসব কাজ পরিবেশকে কীভাবে প্রভাবিত করে লেখো।
উঃ প্রকৃতিনির্ভর, প্রযুক্তিনির্ভর ও সেবামূলক কাজ প্রকৃতিনির্ভর, প্রযুক্তিনির্ভর ও সেবামূলক কাজের কিছু নমুনা হল—
প্রকৃতিনির্ভর কার্যাবলি:- কৃষিকাজ, মৎস্যচাষ, পশুপালন, বনজসম্পদ ও খনিজসম্পদ আহরণ প্রভৃতি।
প্রযুক্তিনির্ভর কার্যাবলি :- লৌহ-ইস্পাত শিল্প, কার্পাস বয়ন শিল্প, পশম শিল্প প্রভৃতি।
সেবামূলক কার্যাবলি :- ডাক্তারি, ওকালতি, শিক্ষকতা প্রভৃতি।
পরিবেশে প্রকৃতিনির্ভর কাজের প্রড়াব:- প্রকৃতিনির্ভর কাজে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। যেমন—কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার, কীটনাশক, আগাছানাশক ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে মাটি দূষিত হয়, খনিজ দ্রব্য আহরণের সময় বনভূমি বিনষ্ট হয় ।
পরিবেশের ওপর প্রযুক্তিনির্ভর কাজের প্রভাব :- প্রযুক্তিনির্ভর কাজে সর্বপেক্ষা বেশি পরিবেশের ক্ষতি হয়। শিল্পবিপ্লবের সময় থেকেই কলকারখানা, শিল্প, যন্ত্রপাতির ব্যবহার পরিবেশের ক্ষতি করেই চলেছে। এরজন্য জল, মাটি, বাতাস দূষিত হয়।
পরিবেশের ওপর সেবামূলক কাজের প্রভাব :- সেবামূলক কাজেও পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ে। যেমন—আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থান উন্নতিসাধন, কলকারখানা নির্মাণ প্রভৃতি কারণে বণভূমির ধ্বংসসাধন, চিকিৎসাক্ষেত্র থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থ (সিরিঞ্জ ওষুধের প্যাকেট, কাচের বোতল প্রভৃতি) প্রভৃতি পরিবেশের অবনমন ঘটায়।
2. সভ্যতার বিবর্তন পরিবেশের ওপর কী প্রভাব ফেলেছে?
উঃ মানুষ একসময় বন থেকে ফল সংগ্রহ করত আবার পশুশিকার করেও জীবিকা নির্বাহ করত। তারপর বিভিন্ন সময় বা কালের সাথে সাথে মানুষ উন্নত হয়েছে এবং নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার জীবন অতিবাহিত করেছে। এগুলি হল – 1. শিকার ও খাদ্যসংগ্রহের কাল, 2. পশুপালন ও পশুচারণের কাল, 3. কৃষিকার্যের কাল, 4. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিল্পোন্নয়নের কাল। এই প্রতিটি পর্যায়ে পরিবেশের ওপর বিভিন্ন প্রভাব পড়েছে, যথা— –
1. শিকার ও খাদ্যসংগ্রহের কাল: এই পর্যায়ে মানুষ প্রকৃতির কোনোরকম পরিবর্তন না ঘটিয়েই জীবনযাপন করত, ফলে এই পর্যায়ে মানুষ দ্বারা পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। এইসময় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই মানুষ আগুনের ব্যবহার শিখেছিল। এ ছাড়া পশুশিকার, বন থেকে ফলমূল সংগ্রহ করে খাওয়া এবং বন্যপ্রাণীর থেকে আত্মরক্ষা করা প্রভৃতিও শিখেছিল তারা।
2. পশুপালন ও পশুচারণের কাল: আগুন জ্বালাতে শেখা এবং তার ব্যবহারের পর সভ্যতার বিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ের সূচনা হয়। এটি হল—পশুপালন ও পশুচারণ করা। প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষ মূলত দুধ এবং মাংসের জন্য পশুপালন আরম্ভ করে।
3. কৃষিকার্যের কাল: খাদ্য জোগানের জন্য কৃষিজমি তৈরি এবং কৃষির প্রচলন সভ্যতার বিবর্তনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর ফলে মানুষ স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে, বনভূমি কেটে কৃষিজমি তৈরি করে চাষবাস শুরু হয়। ঢাকার আবিষ্কার সভ্যতায় আরও গতি প্রদান করে। এই সময় পর্যন্ত পরিবেশের যে সামান্য ক্ষতি হত তা নিজে থেকেই পূরণ হয়ে যেত।
4. বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিল্পায়নের কাল: অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ড তথা ইউরোপে শিল্পবিপ্লবের সময় থেকেই পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকল, বাড়তে থাকল জনসংখ্যা। কৃষি, শিল্প আর বসতির জন্য জমির চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকল এবং তৈরি হল নতুন নতুন রাস্তাঘাট, কলকারখানা, শহর, নগর। প্রকৃতির সম্পদ নির্বিচারে ব্যবহার করতে থাকল মানুষ। উন্নয়নের নামে বিশ্বযুদ্ধ, সামরিক অস্ত্রের পরীক্ষা, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষা প্রভৃতি পরিবেশের অবনমন ঘটাতে শুরু করল। বর্তমানে পরিবেশের এই অবনমন তীব্র আকার ধারণ করেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের নামে পরিবেশ আজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে, আর এর ক্ষতিকর প্রভাব আমরা সকলেই অনুভব করতে পারছি।
আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। “.মানুষেরকার্যাবলী ও পরিবেশের অবনমন অষ্টম শ্রেণী সহায়িকা প্রশ্নোত্তর” এরকম আরো অনেক বিষয় জানতে হলে অব্যশয় আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে ভুলবেন না। ধন্যবাদ ❤