সিস্ট কাকে বলে? বিস্তারিত…. | সিস্ট এর চিকিৎসা

সিস্ট কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো সিস্ট কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

সিস্ট কাকে বলে
সিস্ট কাকে বলে

সিস্ট কাকে বলে?

সিষ্ট হলো ওভারির উপর একধরণের চর্বির মতো কিছু জমাটবদ্ধ হয়ে ওভারিকে ড়েবলাপ হতে না দেওয়াকে সিষ্ট বলে।

অথবা: ওভারির উপর একধরণের চর্বির মতো কিছু জমাটবদ্ধ হয়ে ওভারিকে ড়েবলাপ হতে না দেওয়াকে সিষ্ট বলে।

নারীদের ডিম্বাশয়ে বা সিস্ট ওভারি হওয়া বর্তমানে কমন একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইদানিং অনেক নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এতে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণত ৫০ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে। মূলত ডিম্বাশয়ে পানিপূর্ণ থলেকে ওভারিয়ান সিস্ট বলা হয়। নারীদের নানা ধরনের সিস্ট হয়ে থাকে।

Also Read: টিস্যু কাকে বলে

নানান রকমের সিস্ট

১.ফাংশনাল সিস্ট

সাধারণত বেশির ভাগ নারীর ক্ষেত্রে ফাংশনাল সিস্ট হয়ে থাকে।ওভারি থেকে ডিম না ফুটলে অথবা ডিম ফোটার পরও ফলিকলগুলো চুপসে না গেলে সিস্ট সৃষ্টি হতে পারে।

সমস্যাঃ

এতে সাধারণত তেমন কোনো সমস্যা হয় না। অনেকেরই এটি হতে পারে। পলিসিস্টিক (পিসিওএস) সিস্ট ওভারিতে যে ছোট ফলিকল থাকে সেগুলো পূর্ণাঙ্গ না হলে পলিসিস্টিক সিস্ট হয়।

এ ক্ষেত্রে রোগী যদি অবিবাহিতা হন তাহলে সমস্যা হতে পারে। ছোট বয়সের মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হয়। বিবাহিতাদের অনিয়মিত মাসিক হতে পারে। বন্ধ্যাত্বও হতে পারে।

২. এন্ডমেট্রিওটিক সিস্টঃ

ওভারিতে যে টিস্যুগুলো থাকে সেই টিস্যুগুলো যদি জরায়ু ছাড়া পেটের অন্য কোথাও হয়ে থাকে তখন তাকে এন্ডমেট্রিওটিক সিস্ট বলা হয়। এগুলো ডিম্বাশয়ে এমনিতেই থাকতে পারে এবং বেশি পরিমাণ থাকতে পারে।

সমস্যাঃ

বন্ধ্যত্ব হতে পারে এবং মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।

৩. ডারময়েড সিস্টঃ

এই সিস্টের ভেতর চামড়া, চুল, দাঁতও থাকতে পারে। এটিও সচরাচর থাকে। এর ফলে ক্যান্সার ও হতে পারে।

সমস্যাঃ

অনেক সময় তীব্র ব্যথা করে। যেকোনো সময় ওভারি পেঁচিয়ে যেতে পারে। এর কারণে বিনাইন ক্যানসার হতে পারে।

৪. সিস্ট এডোনোমাঃ

ডিম্বাশয়ে এক ধরনের তরল জাতীয় পদার্থই জমাট বেঁধে এই ধরনের সিস্ট হয়।

সমস্যাঃ

এতে সমস্যা নাও হতে পারে। কারণ ওজনাধিক্যের কারণে সিস্ট হতে পারে। বন্ধ্যাত্ব রোগের চিকিৎসায় যে ঔষধ ব্যবহার করা হয় তার জন্যও এই সমস্যা হতে পারে। হরমোনজনিত কারণে হতে পারে। বংশগত কারণে হতে পারে। ওভারি ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, খাদ্যনালির ক্যান্সার বিশেষ করে বিআরসিএ জিন যাদের থাকে তাদের এ সমস্যা হতে পারে।

সিস্ট এর লক্ষণ

ওভারি সিস্ট হলে খাওয়ার অরুচি হয়। ওজন বেড়ে যেতে পারে। যদি এর কারণে ক্যান্সার হয় তখন ওজন কমে যেতে পারে। বমি হয়ে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য হয় এবং পেট তাড়াতাড়ি বড় হয়ে যায়। কিছু সিস্টের ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে।

Also Read: শক্তি কাকে বলে

সিস্ট রোগ নির্ণয়

এই রোগ নির্ণয় করতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়। এছাড়া সিটি স্ক্যান, এমআরআই, হরমোন লেভেল দেখা, লেপারোস্কোপি ইত্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়। আবার কিছু টিউমার মার্কার দিয়েও রোগ নির্ণয় করা হয়। যেমন, সিএ ১২৫ পরীক্ষা করা হয়।

সিস্ট এর চিকিৎসা

কিছু কিছু বিনাইন টিউমারে যেগুলোর ক্ষেত্রে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে না সেগুলোতে ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। আর যদি বেশি সমস্যা হয়, ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে তখন প্রচণ্ড ব্যথা হয়, সিস্ট বড় হতে থাকে তখন সার্জারি করা হয়। এছাড়া লেপারেস্কোপি, লেপারেকটমিও করা হয়। আর ক্যান্সার হলে ক্যামোথেরাপি বা রেডিও থেরাপি করতে হয়।

সিস্ট প্রতিকারের উপায়

ইস্ট্রজেন নিয়ন্ত্রণ : ওভারিতে সিস্ট হওয়ার অন্যতম কারণ ইস্ট্রজেন হরমোনের সাম্য নষ্ট হওয়া। ইস্ট্রজেনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ওভিউলেশন অনিয়মিত হয়। যার ফলে ওভারিতে সিস্ট তৈরি হয়। তাই সিস্ট রুখতে শরীরে ইস্ট্রজেন ব্যালান্সের দিকে খেয়াল রাখুন।

সয়া প্রোটিন, প্রসেসড মিট শরীরে ইস্ট্রজেনের পরিমাণ বাড়ায়। প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খেলেও শরীরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ইস্ট্রজেনের পরিমাণ বাড়তে পারে। তাই ডায়েটে যতটা সম্ভব অরগ্যানিক মিট ও ডেয়ারি প্রডাক্ট রাখুন। এতে ইস্ট্রজেনের সঠিক মাত্রা বজায় থাকবে।

ডায়েট : চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও অনিয়মিত লাইফস্টাইল ওভারিয়ান সিস্টের অন্যতম কারণ। ডায়েটে ফল, সবুজ শাক-সবজি, গোটা শস্যের পরিমাণ বেশি থাকলে সিস্টের মোকাবিলা করা সহজ হবে।

হার্বাল উপায় : বেশ কিছু হার্বাল জিনিস এন্ডোক্রিন সিস্টেম সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। হরমোনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখা, ওভিউলেশন নিয়মিত করতে ও জননতন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এ সব প্রাকৃতিক মূল। ড্যান্ডেলিয়ন, মিল্ক থিসল ইস্ট্রজেনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ : অতিরিক্ত ওজন ও বিএমআই বেশি হওয়ার কারণেও ওভারিয়ান সিস্টে আক্রান্ত হচ্ছেন মহিলারা। মেদ ঝরিয়ে বিএমআফ ২৫-এর নিচে নিয়ে আসতে পারলে ওভারিয়ান সিস্টের সমস্যা অনেকটাই কাটানো যেতে পারে।

তো আজকে আমরা দেখলাম যে সিস্ট কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment