হাদিস কাকে বলে? | হাদিস কত প্রকার ও কি কি? | হাদীসের গুরুত্ব

হাদিস কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো হাদিস কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

হাদিস কাকে বলে,দিস কত প্রকার ও কি কি,দীসের গুরুত্ব

হাদিস কাকে বলে,দিস কত প্রকার ও কি কি,দীসের গুরুত্ব
হাদিস কাকে বলে

হাদিস কাকে বলে?

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতি হলো হাদিস।

ফক্বীহগণের পরিভাষায় নাবী কারীম (ﷺ ) আল্লাহর রাসূল হিসেবে যা কিছু বলেছেন, যা কিছু করেছেন এবং যা কিছু বলার বা করার অনুমতি দিয়েছেন অথবা সমর্থন জানিয়েছেন তাকে হাদীস বলা হয়।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন,হাদিস এমন একটি শাস্ত্র যার মাধ্যমে মহানবী (সাঃ) এর বক্তব্য বা কথা ও অবস্থা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।”

মিজানুল আকবর প্রণেতার মতে, “রাসূল পাক (সাঃ) এর সাথে সম্পর্কিত কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে হাদীস বলা হয়।”

জমহুর মুহাদ্দিস-ই কিরাম এর মতে, “মহানবী (সাঃ) ও সাহাবী কিরাম এর কথা কাজ ও মৌনসম্মতিকে হাদীস বলে।”

ড. মুহাম্মদ ত্বহান বলেছেন, “যে কথা, কাজ ও সমর্থনের সম্বন্ধ মহানবী (সাঃ) এর দিকে করা হয়েছে তাকে হাদীস বলে।”

নূরুল আনওয়ার গ্রন্থে বলা হয়েছে, “শুধুমাত্র রাসূল (সাঃ) এর বাণীকেই হাদীস বলা হয়।”

অধিকাংশ মুহাদ্দিসিনে কিরামের মতে, “মহানবী (সাঃ) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতি এবং সাহাবী ও তাবেঈগণের বক্তব্যকে হাদিস বলে।”

ইসলামী শরীয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো হাদিস। একে কুরআনের ব্যাখ্যা বলা হয়। এটি কুরআন বুঝার পথকে সহজ করে দেয়।

Also Read: কোয়ালিটি কাকে বলে

হাদিসের পরিচয়

হাদিস আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হলো –

  • কথা / বাণী
  • উপদেশ
  • বক্তব্য ইত্যাদি
  • কাহিনী / ঘটনা
  • সংবাদ

হাদিস কত প্রকার ও কি কি?

মতনের দিক থেকে হাদীস ৩ প্রকার। যথাঃ-

  1. হাদীস-ই- মারফু
  2. হাদীস-ই- মাওকুফ
  3. হাদীস-ই- মাকতু

হাদীস-ই- মারফু: যে হাদীসের সনদ সরাসরি মহানবী (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে হাদিসে হাদীসে মারফু বলে।

হাদীস-ই- মাওকুফ: যে হাদীসের সনদ মহানবী (সাঃ) পর্যন্ত পৌঁছে নাই এবং সাহাবী কিরাম (রাঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে হাদীসে মাওকুফ বলে।

হাদীস-ই- মাকতু: যে হাদিসের সনদ তাবেঈ (রহঃ) পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে হাদীসে মাকতু বলে।

রাবী বাদ পড়া হিসাবে হাদীস 2 প্রকার।যথাঃ

  1. মুত্তাছিল হাদীস
  2. মুনকাতে হাদীস

মুত্তাছিল হাদীস: যে হাদীসের সনদের ধারাবাহিকতা সর্বস্তরে ঠিক রয়েছে কোথাও কোন রাবী বাদ পড়ে নি তাকে মুত্তাছিল হাদীস বলে।

মুনকাতে হাদীস: যে হাদীসের সনদের মধ্যে কোন রাবীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুনকাতে হাদীস বলে।

হাদীসের গুরুত্ব

হাদীসের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে হাদিসের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো –

পবিত্র আল কুরআনে আল্লাহ তা’আলা হাদীসের গুরুত্বের কথা বর্ণনা করেছেন এবং এর অনুকরণ ও অনুসরণকে মানুষের জন্য অপরিহার্য বলে ঘোষণা করেছেন আবার কখনো কখনো রাসূলের অনুসরণকেই আল্লাহ তা’আলার অনুসরণের জন্য যথেষ্ট বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

কুরআনের ভাষায়, “অর্থাৎ, আর রাসূল (সাঃ) তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন, তা ধারণ কর এবং তিনি যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।”

আল্লাহ তা’আলা আরও বলেছেন, “অর্থাৎ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য কর আর আনুগত্য কর তোমাদের মধ্যে কর্তৃত্বশীলদের।”

রাসূলের দৃষ্টিতে হাদীসের গুরুত্বঃ রাসূল (সাঃ) মানুষের হিদায়াতের জন্য কুরআনের পাশাপাশি হাদীসের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, “অর্থাৎ,নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট এমন দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যতক্ষন পর্যন্ত তা তোমরা দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা বিভ্রান্ত হবে না, এ দুটি হলো আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের হাদীস।”

শরীয়তের দ্বিতীয় উৎসঃ কুরআনের পরই হাদীসের স্থান। শরীয়তের দ্বিতীয় উৎস হিসেবে এর গুরুত্ব অতুলনীয়। এটি কুরআনের ব্যাখ্যা। কারণ এটি আল্লাহর পরোক্ষ বাণী।

এ সম্পর্কে এরশাদ হয়েছে, “অর্থাৎ, রাসূল নিজ প্রবৃত্তি থেকে কখনো কথা বলেন না, বরং তার নিকট প্রেরিত ওহী ছাড়া ওসব আর কিছুই নয়।”

তো আজকে আমরা দেখলাম যে হাদিস কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment