কৃষি কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো কৃষি কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
কৃষি কাকে বলে?
উৎপাদন লাভের উদ্দেশ্যে মাটি বা জলাশয়ে ফসলাদি উৎপাদন, মাছ এবং পশু পালনের প্রয়াস ও কৌশলকে কৃষি বলে।
খাদ্য, পশম এবং অন্যান্য পণ্য সরবরাহের জন্য ফসল ও প্রাণী পালন করার কৌশলকেই কৃষি বলা হয়।
জীবনধারণের তাগিদে মানুষ জমি চাষ করে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে। সাধারণভাবে জমি চাষের এই কাজকে কৃষি বলে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ভূখণ্ড ব্যবহার করে ফসলাদি উৎপাদন করা যায়।
আবার, অর্থশাস্ত্রে কৃষি বলতে কেবল ফসল উৎপাদন করাকেই বুঝায় না, বরং উৎপাদন লাভের উদ্দেশ্যে পশুপাখি পালনের মতো কাজও কৃষির অন্তর্ভুক্ত। তাই প্রকৃত অর্থে উৎপাদন লাভের উদ্দেশ্যে কোন নির্দিষ্ট ভূমিক্ষেত্রে ও তদুপরিস্থ ঘর বা দালান ব্যবহার করে ফসলাদি উৎপাদন ও পশুপালনের প্রয়াস ও কৌশলকে কৃষি বলে।
আসাদুজ্জামানের মতে, ” ব্যাপকভাবে কৃষি বলতে শস্য উৎপাদন, পশুপালন, মৎস্য চাষ এবং বনজ সম্পদ সংরক্ষণের মত নানা বিষয়কে বুঝানো হয়। ”
কৃষির প্রধান শাখা কয়টি ও কি কি?
নিম্নরূপ পাঁচটি প্রধান শাখা রয়েছে:
- কৃষিবিদ্যা
- কৃষি প্রকৌশল
- প্রাণী বিজ্ঞান
- কৃষি অর্থনীতি
- উদ্যানপালন
Also Read: উন্নয়নশীল দেশ কাকে বলে
(1)কৃষিবিদ্যা
কৃষিবিদ্যা হল, গাছপালা লাগিয়ে খাদ্য, জ্বালানী, ফাইবার ইত্যাদির কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শাখা। উদ্ভিদ জেনেটিক্স, উদ্ভিদ শারীরবিদ্যা, আবহাওয়াবিদ্যা এবং মৃত্তিকা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কৃষিবিদ্যা কাজ করে।
কৃষিবিদ্যার প্রয়োগ বিভিন্ন মিশ্র বিজ্ঞানের সঙ্গে যেমন বাস্তুবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি, পৃথিবী বিজ্ঞান এবং জেনেটিক্সের বিজ্ঞানের মতো।
(2)কৃষি অর্থনীতি
কৃষি অর্থনীতি, অর্থনীতির একটি শাখা হিসাবে শুরু হয়েছিল যা অর্থনৈতিক তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে জমির ব্যবহার, খাদ্য ও ফাইবার পণ্যের উৎপাদন ও বন্টনকে উন্নতি করা।
(3)কৃষি প্রকৌশল
কৃষি প্রকৌশল হল সিভিল, যান্ত্রিক বৈদ্যুতিক, এবং রাসায়নিক প্রকৌশলের একটি শৃঙ্খলা যা কৃষি উৎপাদনের পাশাপাশি প্রক্রিয়াকরণের অধ্যয়ন করে।
(4)প্রাণী বিজ্ঞান
প্রাণী বিজ্ঞান হল মূলত পশুদের প্রজনন এবং যত্ন নেওয়া নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের জন্য। যেমন- তাদের মাংস, দুধ এবং পশম।
(5)উদ্যানপালন
উদ্যানপালন কৃষির একটি শাখা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যা মানুষের দ্বারা সরাসরি খাদ্য, ঔষধি উদ্দেশ্যে, নান্দনিক পরিতৃপ্তির জন্য ব্যবহৃত নিবিড়ভাবে চাষ করা উদ্ভিদের চাষের সাথে সম্পর্কিত।
একটি সমাজ গঠন করতে কৃষি কিভাবে ভূমিকা পালন করে?
আদিযুগে পরিবারের সদস্যরা সক্ষমতা ও সুবিধা অনুযায়ী পরিবারের কাজগুলো করতেন। এভাবেই মানুষের মাঝে শ্রম বিভাজনের সুবিধা তৈরি হয়েছিল। সমাজ গঠনে এই শ্রম বিভাজন ভূমিকা রেখেছিল। দিনে দিনে পরিবারের আকার ও সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করল। মানুষ ফসলের পরিচর্যা করে ফলন বৃদ্ধি করতে শিখল।
ফসল বেশিদিন সংরক্ষণ করে রাখার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করল। ফলে কৃষির পরিধি ও পরিসর বৃদ্ধি পেতে থাকল। কৃষি বিষয়ক এসব পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য মানুষ তাদের বসবাসসহ বিভিন্ন অভ্যাসের পরিবর্তন করেছিল।
মানুষ আর গুহায় না থেকে পরিবেশ থেকে মাটি, বাঁশ, কাঠ, পাতা ব্যবহার করে ঘর-বাড়ি তৈরি করতে শুরু করল। এভাবে বেশকিছু পরিবারের বসতবাড়ি মিলে গ্রামের পত্তন হয়। কৃষির কারণেই মানুষ বেশি বেশি পরিবেশ সচেতন হতে থাকল।
ঋতুচক্রের উপর ফসল উৎপাদন যে নির্ভরশীল এটা শিখল। কোন ঋতুতে কোন ফসল উৎপাদন করা যায় তা বুঝল। ফলে উৎপাদন দ্রুতই বাড়তে লাগলো। কৃষিকাজ এবং পরিবারের নানা আনুষঙ্গিক জিনিসের প্রয়োজন অনুভব করে তা উৎপাদনে কিছু লোক অন্যদের চাইতে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় শ্রম বিভাজন হলো।
কুমার মাটির হাঁড়ি-পাতিল, কামার ধাতবযন্ত্র তৈরি করতে লাগল। এভাবেই সবাইকে নিয়ে সমাজ গঠিত হলো। এ ধরনের সমাজকেই নৃবিজ্ঞানীগণ আদি কৃষি সমাজ বলেছেন।
বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে সমস্যা কি কি?
বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি কৃষির উপর গড়ে উঠলেও এদেশের কৃষি ক্ষেত্রে নানা সমস্যা রয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামাকে ক্রমেই দুর্বল করে দিচ্ছে। কৃষির কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন কে ব্যহত করছে। এদেশের কৃষিতে বিরাজমান সমস্যাগুলো কি কি তা নিম্নে দেওয়া আলোচনা করা হল –
- কৃষকের দারিদ্র্য।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
- কার্যকর নীতি ও পদক্ষেপের অভাব।
- জমির স্বল্পতা।
- ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থা।
- শস্য গুদামজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের অভাব।
- মৃত্তিকার স্বাস্থ্যহীনতা।
- উন্নত প্রযুক্তির অভাব।
- প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা।
- কৃষিকাজে দক্ষতার অভাব।
তো আজকে আমরা দেখলাম যে কৃষি কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!