শক্তি কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো শক্তি কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
শক্তি কাকে বলে?
কাজ কার্য করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। শক্তি হল কাজ করার ক্ষমতা।
অথবা: কোন ব্যক্তি, বস্তু বা পদার্থের কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে।
অথবা: কোন বস্তুর উৎসের কাজ করার সামর্থকে শক্তি বলে।
একে সাধারণত E দ্বারা প্রকাশ করা হয়। বস্তু সর্বমোট যতখানি কাজ করতে পারে তা-ই হচ্ছে বস্তুর শক্তির পরিমাণ। অর্থাৎ শক্তির পরিমাণ = বস্তু দ্বারা কৃত কাজের পরিমাণ = বলের দিকে বস্তুর সরণের উপাংশ × বল ।
যার কাজ করার সামর্থ্য যত বেশি তার শক্তিও তত বেশি। শক্তি একটি অদিক বা স্কেলার রাশি।
শক্তি কত প্রকার কি কি?
শক্তিকে মোটামুটি 8 ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –
- যান্ত্রিক শক্তি (Mechanical Energy)
- তাপশক্তি (Heat Energy)
- শব্দ শক্তি (Sound Energy)
- আলোক শক্তি (Light Energy)
- চুম্বক শক্তি (Magnetic Energy)
- বিদ্যুৎ শক্তি (Electrical Energy)
- রাসায়নিক শক্তি (Chemical Energy)
- পারমাণবিক শক্তি (Atomic Energy)
Also Read: ভূগোল কাকে বলে
যান্ত্রিক শক্তি
যান্ত্রিক শক্তি হল সেই শক্তি যা একটি বস্তুর গতির কারণে বা তার অবস্থানের কারণে ধারণ করে।
তাপ শক্তি
তাপ শক্তি যা তাপমাত্রার পার্থক্যের ফলে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ, তাপ প্রবাহিত হয় উষ্ণতর শরীর থেকে ঠান্ডায়।
আলোক শক্তি
আলোক শক্তির জন্য সূর্যের আলো সবচেয়ে ভালো উদাহরণ।
পারমাণবিক শক্তি
প্রতিটি পরমাণুর মধ্যে যে শক্তি মজুত আছে তাই পরমাণু শক্তি। ফিউশন বা ফিশন প্রক্রিয়ায় পরমাণুশক্তি উৎপাদন করা যায়। পারমাণবিক শক্তি হল একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস বা মূল অংশে থাকা শক্তি।
রাসায়নিক শক্তি
রাসায়নিক শক্তি রাসায়নিক যৌগের বন্ধনে সঞ্চিত শক্তি , যেমন পরমাণু এবং অণু। রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে এই শক্তি নির্গত হয়। সাধারণত, একবার কোনো পদার্থ থেকে রাসায়নিক শক্তি নিঃসৃত হলে সেই পদার্থটি সম্পূর্ণ নতুন পদার্থে রূপান্তরিত হয়।
সৌর শক্তি
সৌর শক্তি হল সূর্য থেকে আসা আলো এবং তাপ । মানুষ সূর্যের শক্তিকে কয়েকটি ভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করতে পারে: ফটোভোলটাইক কোষ, যা সূর্যালোককে বিদ্যুতে রূপান্তর করে।
শব্দশক্তি
শব্দ শক্তি হল এক ধরণের শক্তি যা জীবিত জিনিসগুলি শুনতে পায়। শব্দ শক্তি যখন একটি শক্তি, হয় শব্দ বা চাপ, একটি বস্তু বা পদার্থ কম্পিত হয় ফলাফল. সেই শক্তি তরঙ্গে পদার্থের মধ্য দিয়ে চলে।
চৌম্বক শক্তি
প্রতিটি চৌম্বক ক্ষেত্রে শক্তি থাকে, যাকে চৌম্বক শক্তিও বলা হয়। যেহেতু একটি চৌম্বক ক্ষেত্র বৈদ্যুতিক স্রোত দ্বারা উত্পন্ন হয়, তাই চৌম্বক শক্তি হল চলন্ত চার্জ বাহক (ইলেকট্রন) এর একটি শক্তি রূপ ।
তড়িৎ শক্তি
বৈদ্যুতিক শক্তি হল বৈদ্যুতিক চার্জযুক্ত কণার চলাচলের ফলে প্রাপ্ত শক্তি।
Also Read: পরিধি কাকে বলে
শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি
শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, এটি শুধু এক রূপ থেকে অপর এক বা একাধিকরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট এবং অপরিবর্তনীয়।
শক্তির যেকোন রূপকে অন্য যেকোনো রূপে রূপান্তর করা যায় তবে মোট শক্তির পরিমাণ একই থাকে। একেই শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি বলে।
শক্তির রূপান্তর
এই মহাবিশ্ব জুড়ে শক্তি বিভিন্ন রূপে বিরাজিত। বিভিন্ন প্রকার শক্তি পরস্পরের সাথে সম্বন্ধযুক্ত। এক শক্তিকে অন্য শক্তিতে রূপান্তর সম্ভব এবং এর নামই শক্তির রূপান্তর। শক্তি রূপান্তরের কয়েকটি উদাহরণ নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
1.বৈদ্যুতিক ইস্ত্রিতে তড়িৎ বা বিদ্যুৎ চালনা করে তাপ উৎপন্ন করা হয়। এই তাপের সাহায্যে কাপড় চোপড় ইস্ত্রি করা হয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ শক্তি তাপ শক্তিতে এবং তাপ শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হলো।
2.দুই হাতের তালু পরস্পরের সাথে ঘষলে তাপ উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে যান্ত্রিক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হলো।
3.ফটোগ্রাফিক ফিল্মের উপর আলোক সম্পাত করে রাসায়নিক ক্রিয়ার মাধ্যমে আলোক চিত্র তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে আলোক শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হলো।
বৈদ্যুতিক পাখার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে পাখা ঘুরতে থাকে। এ স্থলেও বৈদ্যুতিক শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হলো।
SOME FAQ:
শক্তির মাত্রা কোনটি?
কাজের ও শক্তি মাত্রা একই, [E] = [ML2T-2]
শক্তির চিহ্ন কি?
শক্তি কে E দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
শক্তির রাশি কি?
শক্তি একটি স্কেলার রাশি।
তো আজকে আমরা দেখলাম যে শক্তি কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!