আজকে আমরা জানবো কোণ কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
কোণ কাকে বলে?
দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়। অন্যভাবে বললে, দুইটি রশ্মির প্রান্তবিন্দু পরস্পর মিলিত হয়ে যে আকৃতি ধারণ করে তাকে কোণ বলে।
Kon Kake Bole?
যদি দুইটি সরলরেখা পরস্পরের সাথে কোনো বিন্দুতে মিলিত হয়, তবে মিলন বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়। দুটি সরলরেখা তির্যকভাবে পরস্পরের সাথে মিলিত হলে মিলিত বিন্দুতে কোণ উৎপন্ন হয়।
Also Read: আইসোটোপ কাকে বলে?
Also Read: ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?
কোণ কত প্রকার?
কোণের নির্দিষ্ট প্রকারভেদ করা একটু কঠিন। তবে আকার-আকৃতি, গঠন ও পরিমাপের ভিত্তিতে কোণের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
- শুণ্য কোণ
- সূক্ষ্মকোণ
- সমকোণ
- স্থূলকোণ
- সরলকোণ
- প্রবৃদ্ধ কোণ
- পূর্ণ কোণ
- তির্যক কোণ
- বিপ্রতীপ কোণ
- সন্নিহিত কোণ
- পূরক কোণ
- সম্পূরক কোণ
- পরিপূরক কোণ
- অনুরূপ কোণ
- একান্তর কোণ
- ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ
Also Read: বায়ু দূষণ কাকে বলে?
শুণ্য কোণ কাকে বলে?
যে কোণের পরিমাপ 0° তাকে শুণ্য কোণ বলে। এক্ষেত্রে, আসলে কোনো কোণ উৎপন্ন হয়নি।
সূক্ষ্মকোণ কোণ কাকে বলে?
এক সমকোণ বা ৯০° অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলে।
সমকোণ কাকে বলে?
যে কোণের পরিমাপ ৯০° তাকে সমকোণ বলে।
স্থূলকোণ কাকে বলে?
৯০° অপেক্ষা বড় এবং ১৮০° অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সমকোণ অপেক্ষা বড় এবং সরলকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে।
সরলকোণ কাকে বলে?
যে কোণের পরিমাপ ১৮০° তাকে সরলকোণ বলে।
প্রবৃদ্ধ কোণ কাকে বলে?
১৮০° অপেক্ষা বড় এবং ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সরলকোণ অপেক্ষা বড় এবং পূর্ণ কোণ বা ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে।
পূর্ণকোণ কাকে বলে?
যে কোণের পরিমাপ ৩৬০° তাকে পূর্ণকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, একটি রশ্মি তার আদি অবস্থান থেকে ঘুরে আবার একই অবস্থান ফিরে আসলে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে পূর্ণকোণ বলে। এ রকম একটি রশ্মি একবার ঘুরে আসলে রশ্মির প্রান্তবিন্দুতে উৎপন্ন কোণের পরিমাপ হয় ৩৬০°। তাই পূর্ণকোণের মান ৩৬০°।
তির্যক কোণ কাকে বলে?
যে কোণের পরিমাপ ৯০° নয় বা ৯০° এর কোনো গুণিতক নয় তাকে তির্যক কোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে কোণের মান সমকোণের কোন গুণিতক নয় তাকে তির্যক কোণ বলে। সেই হিসাবে, সব সূক্ষ্মকোণ এবং স্থূলকোণই এক একটি তির্যক কোণ বলে পরিচিত।
বিপ্রতীপ কোণ কাকে বলে?
একটি কোণের বিপরীত রশ্মি দুইটি ঐ কোণের বিপরীতে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে পূর্বের কোণের বিপ্রতীপ কোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দুইটি পরস্পরচ্ছেদী সরলরেখা কোনো একটি বিন্দুতে মিলিত হলে, মিলিত বিন্দুতে দুই জোড়া বিপরীত কোণ উৎপন্ন হয়, প্রতিজোড়া বিপরীত কোণের একটিকে অপরটির বিপ্রতীপ কোণ বলে। বিপ্রতীপ কোণদ্বয় পরস্পর সমান হয়।
সন্নিহিত কোণ কাকে বলে?
একই সমতলে অবস্থিত দুইটি কোণের শীর্ষবিন্দু ও একটি রশ্মি যদি সাধারণ হয় এবং কোণ দুইটি, সাধারণ রশ্মির বিপরীত দিকে অবস্থান করে, তবে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে। যদি একই শীর্ষবিশিষ্ট দুইটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে এবং কোণ দুইটির কোনো অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ না হয়, তাহলে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে।
পূরক কোণ কাকে বলে?
দুইটি কোণের যোগফল ৯০° বা এক সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির পূরক কোণ বলে। পরস্পর পূরক কোণ দুইটি যদি সন্নিহিত কোণ হয়, তবে সন্নিহিত কোণ দুইটির সাধারণ বাহু ব্যতীত অপর বাহু দুইটি বাহু পরস্পর লম্ব হয়। ইউক্লিডিও জ্যামিতি অনুযায়ী, একটি সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষ্মকোণদ্বয়ের একটি অপরটির পূরক কোণ।
সম্পূরক কোণ কাকে বলে?
দুইটি কোণের যোগফল ১৮০° বা দুই সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলে।
পরিপূরক কোণ কাকে বলে?
দুইটি কোণের যোগফল ৩৬০° বা চার সমকোণ হলে কোণ দুইটিকে পরস্পর পরিপূরক কোণ বলে।
অনুরূপ কোণ কাকে বলে?
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসব কোণ জোড়া ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির একটি অন্তঃস্থ কোণ এবং অপরটি বহিঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর অনুরূপ কোণ বলে।
একান্তর কোণ কাকে বলে?
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসব কোণ জোড়া ছেদকের বিপরীত পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ অথবা উভয়েই বহিঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর একান্তর কোণ বলে।
ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ কাকে বলে?
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যে দুই জোড়া কোণ ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ বলে।
কোণের বৈশিষ্ট্য সমূহ
১. একটি কোণ হতে ২ টি রশ্মির প্রয়োজন হয়।
২. একটি কোণে একটি মাত্র শীর্ষ বিন্দু থাকে।
৩. একটি কোণের পরিমাণ ৩৬০º এর চেয়ে কখনোয় বড় হওয়া সম্ভব নয়।
৪. সাধারণ একটি কোণের দুটি বাহুতে একটি করে তীর বা অসীম চিহ্ন থাকে।
৫. একটি কোণের বাহু দুটি কে যত বড় বা ছোট করা হোক না কেন, কোণের পরিমাপের কোনো পরিবর্তন হয় না, অর্থাৎ কোণের পরিমাণ একই থাকে।
৬. কোনের পরিমাপের পরিবর্তন করতে হলে এর বাহু দুটি’র মধ্যকার দূরত্ব কম বা বেশি করতে হয়।
৭. তিনটি রেখা বা রশ্মি দ্বারা সর্বচ্চো ২ টি কোণ আকা সম্ভব।
৮. একটি কোণের শীর্ষ বিন্দু দিয়ে অন্য কোনো সরলরেখা চলে গেলে দুটি কোণের সৃষ্টি হয়।
৯. দুইটি সরলরেখা একে অপরকে ছেদ করে শুধুমাত্র চারটি কোণ উৎপন্ন করতে পারে।
১০. একটি বিন্দুতে যে কোণ উৎপন্ন হয় তার পরিমাণ ৩৬০º বা দুই সরলকোণ বা চার সমকোণ।
১১. একটি বিন্দুতে যতো কোণ উৎপন্ন করা হোক না কেনো, কোণ গুলোর সমষ্টি সবসময় ৩৬০º হবে।
১২. ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি বা যোগফল সবসময় ১৮০º হয়।
১৩. চতুর্ভুজের কোণ গুলোর যোগফল সবসময় ৩৬০º হয়।
১৪. বর্গ ও আয়তের একটি বাহু অপর বাহুর সাথে সমকোণে মিলিত হয়।
১৫. বর্গ ও রম্বসের কর্ণ গুলো পরস্পর সমকোণে একে অপরকে ছেদ করে।
১৬. বৃত্তে অন্তর্লিখিত চতুর্ভুজের বিপরীত কোণ গুলোর যোগফল ১৮০º হয়।
১৭. দুটি সন্নিহিত সমকোণ একটি সরলরেখা সৃষ্টি করে।
১৮. দুটি রশ্মির প্রান্ত বিন্দু মিলিত হয়ে কোণ উৎপন্ন করলে একটি কোণ ও একটি প্রবৃদ্ধ কোণ সৃষ্টি হয়।
১৯. বৃত্তের কেন্দ্রে উৎপন্ন কোণের পরিমাণ ৩৬০º।
২০. বৃত্তের একই চাপের উপর দন্ডায়মান কেন্দ্রস্থ কোণ বৃত্তস্থ কোণের দ্বিগুণ হয়।
২১. বৃত্তের ব্যাসের উপর অংকিত বৃত্তস্থ কোণ গুলো সমকোণ হয়।
২২. ত্রিভুজের যে কোনো এক বাহু বর্ধিত করলে ত্রিভুজের বাইরে যে বহিঃস্থ কোণ উৎপন্ন হয় তা এর অন্তঃস্থ কোণ দুটির সমষ্টির সমান হয়।
Also Read: Rastro Biggan Kake Bole
২৩. ত্রিভুজের সমান সমান কোণের বিপরীত বাহু গুলো পরস্পর সমান।
২৪. ত্রিভুজের বৃহত্তম বাহুর বিপরীত কোণ বৃহত্তম এবং ক্ষুদ্রতম বাহুর বিপরীত কোণ ক্ষুদ্রতম হয়।
২৫. একটি সমকোণী ত্রিভুজের অবনতি কোণ সর্বদা উন্নতি কোণের সমান হয়।
২৬. সমদ্বিবাহু ত্রিভুজে ২ টি সমান কোণ থাকে।
২৭. সমবাহু ত্রিভুজের কোণ গুলো পরস্পর সমান।
২৮. কোনো ত্রিভুজে শুধুমাত্র একটি কোণ সমকোণ অথবা শুধুমাত্র একটি কোণ স্থুলকোণ থাকতে পারে।
২৯. কোণের পরিমাপ সাধারণত ডিগ্রি’তে প্রকাশ করা হয় এবং ডিগ্রি চিহ্ন হিসেবে º ব্যবহার করা হয়।
৩০. অনির্ধারিত কোণ কে থিটা চিহ্ন অর্থাৎ θ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
৩১ কোণের বাহু দুটির মিলিত বিন্দু কে কোণের শীর্ষ বিন্দু বলে।