বল কাকে বলে? | বলের বৈশিষ্ট্য | বলের একক | বলের মাত্রা | বল কত প্রকার ও কি কি?

বল কাকে বলে: আজকে আমরা জানবো বল কাকে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি আপনারা এই প্রশ্নের উত্তর ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।

বল কাকে বলে,বলের বৈশিষ্ট্য,বলের একক,বলের মাত্রা,বল কত প্রকার ও কি কি

বল কাকে বলে,বলের বৈশিষ্ট্য,বলের একক,বলের মাত্রা,বল কত প্রকার ও কি কি
বল কাকে বলে

বল কাকে বলে?

যা স্থির বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তাকে গতিশীল করে বা করতে চায় অথবা যা গতিশীল বস্তুর উপর ক্রিয়া করে তার গতির পরিবর্তন করে বা করতে চায় তাকে বল বলে।

বলের বৈশিষ্ট্য

  1. কোনো স্থির বস্তুর উপর প্রযুক্ত বল সেই স্থিতিশীল বস্তুকে গতিশীল করতে পারে।
  2. বল সবসময় জোড়ায় জোড়ায় ক্রিয়া করে।
  3. কেনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে বস্তুর বিকৃতি ঘটতে পারে।
  4. একটি গতিশীল বস্তুর উপর বল প্রযুক্ত করা হলে সেই গতি বা দিক পরিবর্তন হয়ে যায়।

Also Read: ইসলামিক কুইজ প্রশ্ন ও উত্তর 

বলের একক

SI পদ্ধতিতে বলের একক নিউটন(N)

বলের মাত্রা

বলের মাত্রা [F] =[MLT-2]

বলকে সাধারণত F দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

m ভরের কোনো বস্তুর উপর F বল প্রয়োগ করা হলে ত্বরণ a সৃষ্টি হয়,

F = ma অর্থাৎ ত্বরণ এবং ভরের গুণফল দ্বারা বল পরিমাপ করা হয়।

বল কত প্রকার ও কি কি?

প্রকৃতিতে বিভিন্ন ধরনের বল রয়েছে।এর মধ্যে কিছু মৌলিক বল আবার কিছু যৌগিক বল।

  1. মৌলিক বল
  2. যৌগিক বল

মৌলিক বল

যে সকল বল অন্য বল থেকে উৎপন্ন হয় না বরং অন্যান্য বল এই সকল বল থেকে উৎপন্ন হয়, তাদেরকে মৌলিক বল বলে।

মৌলিক বল প্রধানত 4 প্রকার।যথাঃ

  1. মহাকর্ষ বল ( Gravitational force )
  2. তড়িৎ – চুম্বকীয় বল(Electromagnetic force )
  3. সবল নিউক্লীয় বল ( Strong nuclear force )
  4. দুর্বল নিউক্লীয় বল ( Weak nuclear force )

মহাকর্ষ বল : মহাবিশ্বের যে কোনো দুটি বস্তুর মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণ বল ক্রিয়াশীল রয়েছে, এই আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ বল বলা হয় । এই বলের পরিমাণ ক্রিয়াশীল বস্তু দুটির ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং বস্তুদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক । বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে বস্তুদ্বয়ের মধ্যে গ্রাভিটন ( Graviton ) নামক এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের দ্বারা এই মহাকর্ষ বল ক্রিয়াশীল হয়।

Also Read: সমযোজী বন্ধন কাকে বলে

তড়িৎ-চুম্বকীয় বল: দুটি আহিত বা চার্জিত বস্তুর মধ্যে এবং দুটি চুম্বক পদার্থের মধ্যে এক ধরনের বল ক্রিয়াশীল থাকে, এদেরকে তড়িৎ-চৌম্বক বল বলা হয় । চৌম্বক বল এবং তড়িৎ বল আকর্ষণ এবং বিকর্ষণ উভয় ধরনের হতে পারে । ধারণা করা হয় যে , মূলত চার্জহীন এবং ভরহীন ফোটন নামক এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে এই বল কার্যকর হয়।

সবল নিউক্লীয় বল : প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াস। এদেরকে সমষ্টিগতভাবে বলা হয় নিউক্লিয়ন ( Nucleon ) বা ভর বলে। নিউক্লিয়াসের মধ্যে সমধর্মী ধনাত্মক আধানযুক্ত প্রোটনগুলো খুব কাছাকাছি থাকায় এদের মধ্যে কুলঘের বিকর্ষণ বল প্রবল হওয়া উচিত এবং নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে যাওয়ার কথা । কিন্তু বাস্তবে অনেক নিউক্লিয়াসই স্থায়ী ।

নিউক্লিয়নের মধ্যে যে মাধ্যাকর্ষণ বল কাজ করে তা এত নগণ্য যে এই বল কুলঘের বিকর্ষণ বলকে প্রতিমিত (balance) করতে পারে না । সুতরাং নিউক্লিয়াসে অবশ্যই অন্য এক ধরনের সবল বল কাজ করে যা নিউক্লিয়াসকে ধরে রাখে । এই বলকে বলা হয় সবল নিউক্লীয় বল । বিজ্ঞানীদের ধারণা যে নিউক্লিয়নের মধ্যে মেসন ( Meson ) নামে এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের দ্বারা এই বল ক্রিয়াশীল হয় । এই বল আকর্ষণধর্মী , স্বল্প পাল্লা বিশিষ্ট (short range) , চার্জ নিরপেক্ষ এবং নিউক্লিয়াসের বাইরে ক্রিয়াশীল নয়।

দুর্বল নিউক্লিয় বল: প্রকৃতিতে বেশ কিছু মৌলিক পদার্থ রয়েছে যাদের নিউক্লিয়াস স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙ্গে যায় ( যেমন ইউরেনিয়াম , থােরিয়াম ইত্যাদি )। এই সমস্ত নিউক্লিয়াসকে বলা হয় তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস। তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস থেকে তিন ধরনের রশ্মি বা কণা নির্গত হয় যাদেরকে আলফা রশ্মি, বিটা রশ্মি এবং গামা রশ্মি বলা হয়। তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াস থেকে বিটা কণা নির্গত হওয়ার সময় একই সাথে শক্তিও নির্গত হয় । তবে পরিক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে দেখা যায় যে, নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত শক্তির পরিমাণ বিটা কণার গতিশক্তির চেয়ে অনেক বেশি।

1930 সালে ডব্লিউ. পাউলি (W. Pauli ) প্রস্তাব করেন যে অবশিষ্ট শক্তি অন্য এক ধরনের কণা বহন করে যা বিটা-কণার সঙ্গেই নির্গত হয় । এই কণাকে বলা হয় নিউট্রিনো (neutrino)। এই নিউট্রিনো কণা এবং বিটা-কণার নির্গমন চতুর্থ একটি মৌলিক বলের কারণে ঘটে, যাকে বলা হয় দুর্বল নিউক্লীয় বল । এই দুর্বল নিউক্লীয় বল সকল নিউক্লীয় বা তড়িৎ চুম্বকীয় বলের তুলনায় অনেকটা দুর্বল। এই দুর্বল নিউক্লীয় বলের কারণে অনেক নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গন প্রক্রিয়া দ্রুত সংঘটিত হয় । ধারণা করা হয়, বোসন নামক এক প্রকার কণার পারস্পরিক বিনিময়ের মাধ্যমে এই দুর্বল নিউক্লীয় বল কার্যকর হয়।

যৌগিক বল

যে সকল বল মৌলিক বল থেকে উৎপন্ন হয় সে সকল বলই যৌগিক বল।

যেমনঃ ঘর্ষণ বল,টান বল,স্থিতিস্থাপক বল ইত্যাদি।

বলের সঙ্গামূলক ধারণা

একটি নির্দিষ্ট বেগে চলন্ত সাইকেল কে সহজেই আটকানো সম্ভব। তবে একটি জেট প্লেন কে কোনো ভাবেই সনভব নয়।

একটি ফুটবলকে কিক মারলে তা সহজেই সামনের দিকে অগ্রসর হয়। তবে একই আকৃতির লোহার বলকে কিক করলে ফুটবলের মতো অগ্রসর হয় না।

বল কাকে বলে,বলের বৈশিষ্ট্য,বলের একক,বলের মাত্রা,বল কত প্রকার ও কি কি

তো আজকে আমরা দেখলাম যে বল কাকে বলে এবং আরো অনেক বিস্তারিত বিষয় । যদি পোস্ট ভালো লাগে তাহলে অব্যশয়, আমাদের বাকি পোস্ট গুলো ভিসিট করতে ভুলবেন না!

Leave a Comment